সেলিম-জাভেদের বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ

বিনোদন ডেস্ক
০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৯
শেয়ার :
সেলিম-জাভেদের বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ

বলিউডের অন্যতম সেরা চিত্রনাট্যকার সেলিম খান ও জাভেদ আখতার। তারা দুজন এক সঙ্গে কাজ করে ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তাদের হাত দিয়েই এসেছে ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘জঞ্জির’এর মতো সিনেমা। 

এবার তাদের বিরুদ্ধেই নকলের অভিযোগ তুললেন এ সময়ের চিত্রনাট্যকার অমিত আরিয়ান। সেলিম-জাভেদকে চিত্রনাট্যকার না বলে ‘কপি-রাইটার’ উল্লেখ করে অমিত বলেন, ‘এ দুই চিত্রনাট্যকার কখনও কোনো মৌলিক কাজ করেননি। এমনকি শোলেও রাজ খোসলার একটি সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত।’

দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল কমেন্টারির সঙ্গে এক কথোপকথনে সেলিম-জাভেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের লেখক বলে মনে করি না। তাদের সারা দুনিয়া সম্মান করে, কিন্তু আমি দেখি তারা কেবল নকল করে গেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘রাজ খোসলার ১৯৭১ সালের অ্যাকশন ড্রামা ‘মেরা গাও মেরা দেশ’ থেকে নকল করে শোলের গল্প লেখা হয়েছে।’

তাদের নকলের বিষয়টি ব্যাখ্যা দিয়ে অমিত বলেন, ‘শোলেতে দেখা যায়, একজন লোকের হাত কেটে ফেলেছে এক ডাকাত। এরপর তিনি এর শোধ নেয়ার চেষ্টা করেন। মেরা গাও মেরা দেশ সিনেমায় বিনোদ খান্না অভিনীত ডাকাত চরিত্রের নাম ছিল জব্বর সিং। সেখান থেকে শোলেতে এল গব্বর সিং। খোসলার সিনেমায় জয়ন্ত একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যার এক হাত কাটা। তিনি ধর্মেন্দ্রকে ডেকে আনেন প্রতিশোধের জন্য। শোলেতে আরেকটা চরিত্র আমদানি করা হয়েছে কেবল।’

শুধু এ সিনেমাই নয়, ১৯৫৭ সালে মুক্তি পাওয়া ভি শান্তারামের ‘দো আঁখে বারা হাত’ সিনেমার সঙ্গেও এর মিল রয়েছে বলে মনে করেন অমিত আরিয়ান। এমনকি শোলের দৃশ্যে কুরোসোয়ার ‘সেভেন সামুরাই’য়ের দৃশ্য নকল করার কথা বলেছেন তিনি। 

এছাড়া ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিওয়ার’ নিয়েও অভিযোগ করেছেন অমিত। এ চিত্রনাট্যকারের ভাষ্য, ‘এ সিনেমা নিতিন বোস পরিচালিত ১৯৬১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গঙ্গা যমুনা’ থেকে নকল করা। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার ও বৈজয়ন্তী মালা। সিনেমায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকা ভাই তার পুলিশ ভাইয়ের গুলিতে মারা যায় শেষমেশ।’

অভিযোগের রেশ টেনে অমিত আরও জানান, সেলিম-জাভেদ নিজেদের সিনেমার গল্পও নকল করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘‘শক্তি’’ (রমেশ সিপ্পি পরিচালিত) সিনেমায় দেখা যায়, বাবা তার ছেলেকে গুলি করছেন। গঙ্গা যমুনা থেকে নেওয়া এ কনসেপ্ট তার একাধিকবার নিজেদের সিনেমা থেকেই নকল করেছেন।’

চিত্রনাট্যকার অমিত নিজে লিখেছেন ‘এফআইআর’, ‘ইয়ে উন দিনো কি বাত হ্যায়’, ‘লাপাতাগঞ্জ’, ‘এবিসিডি’ ও ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ সিনেমার চিত্রনাট্য। তিনি মনে করেন, বিখ্যাত ও সবার সম্মানের সেলিম-জাভেদ জুটি আসলে যতটা না গল্পকার তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক মনোভাব রাখা মানুষ। 

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় উনারা লেখক নয়, ব্যবসায়ী। আরও ভালো করে বললে বলতে হয় তারা আসলে সেলসম্যান। তারা জানেন, সিনেমা কেমন করে বিক্রি করতে হয়। সে অনুসারেই এর গল্প তৈরি করে গেছেন।’

প্রসঙ্গত, ইয়াদোঁ কি বারাত, ত্রিশূল, কালা পাত্থর, দোস্তানা, সীতা অউর গীতা এবং মিস্টার ইন্ডিয়া সহ ২২টি বলিউড ছবির পাশাপাশি দুটি কন্নড় ছবিতেও সেলিম-জাভেদ একসঙ্গে কাজ করেন। পরে তারা ১৯৮২ সালে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।