মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ, ষড়যন্ত্র বলল বিএনপি
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বরিশালের হিজলা উপজেলার খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। লুটপাটকালে ওই গ্রামের মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তবে অভিযোগটি ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে বিএনপি।
এর আগে, ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বিচার চেয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোক রুহুল কবির রিজভী আহমেদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ বলা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় হিজলা উপজেলার খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামে ভাঙচুর ও লটপাট চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন খোকন দপ্তরী ও সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেনের নেতৃত্বে ২৫০-৩০০ নেতাকর্মী সঙ্ঘবদ্ধভাবে চালানো লুটপাটকালে ওই গ্রামের এক নারীর সামনে তার মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। ওইদিন ওই তিন নেতার নেতৃত্বে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে হিজলা-গৌরব্দী ইউনিয়নের জানপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করা হয়।
এরপর এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট রিজভী আহমেদের কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী, কামাল দেওয়ান, জসিম খলিফা, বাবুল মাতুব্বর ও জহির মোল্লা।
এদিকে ঘটনাটি তদন্তে বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়। গত শনিবার তদন্ত কমিটি বরিশাল এসে অভিযুক্ত হিজলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন খোকন দপ্তরী ও সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেনেকে ডেকে পাঠান এবং ওইদিনের প্রকৃত ঘটনা জানতে চান।
এরপর তদন্ত টিমকে দেওয়া ঘটনার বিবরণ জনসম্মুখে জানাতে আজ সোমবার অভিযুক্ত ওই ৩ নেতা হিজলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে বিবরণ দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক আলতাফ হোসেন খোকন দপ্তরী, যুবদল আহ্বায়ক দেওয়ান রিমন, স্বেচ্ছাসেবকদল আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান খান সজল, ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাইনুল হাসান সম্রাট প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেন বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রে যে অভিযোগটি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। অভিযোগে ঘটনার যে তারিখ ও সময় দেখানো হয়েছে সে সময় আমি রাজধানী ঢাকায় ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে আমি ঢাকার রাজপথে ছিলাম। ৬ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে এলাকায় আসি। অতএব ঘটনাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করা ছাড়া অন্য কিছু নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এই অভিযোগটি দিয়েছে তারা প্রত্যেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থক।’
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে বাড়িটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে ওই নারীর প্রতিবেশিরা জানান, গত দেড়মাস পর্যন্ত বাড়িটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া ওই নারীর ফোনে একাধিবার ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।