ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৩২
শেয়ার :
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্বেগ

স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর অভ্যূত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন, বিভক্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁকবদলের এই সন্ধিক্ষণে জনআকাঙ্খার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আজ রবিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম।

নেতারা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে। সাড়ে ১৫ বছরের দুর্নীতি, লুটপাট, দুঃশাসনের অবসানের পর দেশের জনগণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। জনগণের সেই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রের যে সংস্কারের দাবি উঠেছে তা বাস্তবায়নে অভ্যূত্থানের সকল পক্ষ, সকল অংশীজনের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের বিকল্প নেই।’ 

নেতারা আরও বলেন,‘সফল অভ্যুত্থানের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নানান বিভাজন, বিভক্তির চর্চা শুরু হয়েছে। কোনো কোনো ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে। বিদ্বেষমূলক, হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, দেশে বিভিন্ন স্থানে নারীদের ওপর হামলা এবং হেনস্তা করা হয়েছে। মাজার, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কোনো কোনো পক্ষ ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে নিজেদের অংশগ্রহণ এবং নেতারা দাবি করে জনগণের ঐক্যের ভিত্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে।’ 

নেতারা জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে ক্রিয়াশীল সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। যারা ঐক্য বিনষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে, ঘৃণা এবং বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, অসহিষ্ণু, হিংসাত্মক এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। দেশের ইতিহাসের এই ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণতন্ত্র মঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিভাজন, বিভক্তির পথ পরিহার করে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ, রাষ্ট্র নির্মাণই এই মূহুর্তে দেশের জনগণের প্রত্যাশা।