শাইখ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে যা বললেন ফারজানা ব্রাউনিয়া
চ্যানেল আই’র বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন স্বর্ণ-কিশোরী অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং চ্যানেল আইয়ের সাবেক উপস্থাপিকা ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়া। আজ বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন তিনি। মামলাটি তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলা দায়ের শেষে আদালত প্রাঙ্গণে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে ব্রাউনিয়া বলেন, ‘২০১২ সালে চ্যানেল আইতে আমরা স্বর্ণ-কিশোরী অনুষ্ঠানটির যাত্রা শুরু করেছিলাম। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে এই অনুষ্ঠানটি হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আমি জানতে পারি ফরিদুল রেজা সাগর (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চ্যানেল আই ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম) সমকালে লিখেছেন, “শায়েক সিরাজ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন”। আমার অভিযোগ এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের ২ কোটি কিশোর-কিশোরী আছে তাদের এটা প্রাণের অনুষ্ঠান। তারা তাদের স্বপ্ন ইনভেস্ট করেছে, তাদের শ্রম, তাদের মেধা ও তাদের টাকা ইনভেস্ট করেছে। এই অনুষ্ঠান বিনাবাক্যে বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার কোনো মিডিয়ার নেই।’
ব্রাউনিয়া আরও বলেন, ‘আমার দাবি, একই চ্যানেলে অনুষ্ঠানটি আবারও শুরু করতে হবে। অন্যান্য চ্যানেলও যদি সহযোগিতা করে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে, আমরা অনুষ্ঠান করতে চাই। আমরা তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে চাই, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে চাই। একই সঙ্গে একজন মিডিয়া কর্মীকে যদি বিনা বাক্যে, কথপোকথন ছাড়া হঠাৎ করে তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাহলে তার রুটি-রুজিতে আঘাত পড়ে।’
ব্রাউনিয়া বলেন, ‘শাইখ সিরাজকে যখন আমরা প্রথম লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি, তিনি জানিয়েছেন যে, বোর্ড এটাতে জড়িত। যেহেতু ফরিদুর রেজা চৌধুরী বিদেশে ছিলেন, অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘসময়। তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বিধায় পরবর্তীতে তাকে অনুরোধ করায় তিনি বলেন, ‘বোর্ডে তিনি এটি প্লেস করতে পারছেন না।’ যেহেতু শাইখ সিরাজ বলেছেন, বোর্ডের সবাই এর সঙ্গে জড়িত, তাই বোর্ডের সকলকে এখানে (মামলায়) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ মামলাটি হয়েছে শায়েখ সিরাজ অ্যান্ড গং।’
উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়ার করা মামলার অপর আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবু, আব্দুর রশিদ মজুমদার পারভেজ ও রিয়াজ আহম্মেদ খান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী ফারজানা ব্রাউনিয়া চ্যানেল আইতে ম্যানেজার মার্কেটিং (ইভেন্ট) পদে মাসিক এক লাখ টাকা বেতনে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি সুনামের সঙ্গে ২০১৪ সাল থেকে স্বর্ণ কিশোরী নামে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ও পরিচালনা করে আসছিলেন। ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে কথা বলায় তাকে বিনা নোটিশে প্রতিষ্ঠানটিতে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর তিনি মৌখিকভাবে প্রতিবাদ জানালে আসামিরা জানান, যতদিন পর্যন্ত তাকে লিখিতভাবে বরখাস্ত না করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত তিনি মাসিক ভিত্তিতে মজুরি পাবেন। সেই হিসাবে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৭৯ লাখ টাকা মজুরি বাবদ পাওনা হকদার। পাওনা টাকার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলে আসামিরা তার কোনো জবাব না দিয়ে বাদীকে হুমকি দেন এবং তার কাছে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?