বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের আলটিমেটাম
ক্ষতিপূরণসহ ৬ দফা দাবিতে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি গ্রামের মানুষ মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধন থেকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষকে দাবি মেনে নিতে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। অন্যথায় খনি ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আজ রবিবার বেলা ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে খনি গেটের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা।
কর্মসূচিতে চক মহেশপুর, বৈগ্রাম, কাশিয়াডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বরপাড়া দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট),পূর্ব জব্বরপাড়া, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুর ও হামিদপুরসহ ১১টি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা যোগ দেন।
মানববন্ধন থেকে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার হতে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ১১টি গ্রামের বাড়িঘর ফাটল, কাঁপুনি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে দ্রুত পুনঃবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের এককালীন ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পুনঃনির্মাণ করতে হবে। একইসঙ্গে যেসব ক্ষতিগ্রস্তদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে শতকরা ৫ ভাগ হারে তাদেরকে কয়লা উৎপাদন বোনাস দিতে হবে।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সিনিয়র সহসভাপতি আলী হোসেন, সহসভাপতি রবিউল ইসলাম মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক আল বেরনী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাতার ইকবাল নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, খনি এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আমরা সবসময় অতঙ্কে থাকি। বর্তমানে বাড়িঘর ফাটলসহ কাঁপুনির কারণে রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি না। প্রতি মুহূর্তে সামনে বিপদ দেখছি। ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি।
তারা আরও বলেন, কয়েক দফায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি: -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিতভাবে জানানো হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে টালবাহানা করছেন। সে কারণে আমরা বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টার কাছে আমাদের ক্ষতিপূরণের জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
