জনগণ ক্ষমতার পালাবদলের জন্য গণঅভ্যুত্থানে আসেনি: শ্রম উপদেষ্টা
রাজশাহী ব্যুরো
জনগণ ক্ষমতার পালাবদলের জন্য নয়, বরং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপের জন্য অভ্যুত্থান করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘জনগণ নির্বাচন বা ক্ষমতার পালাবদলের জন্য অভ্যুত্থানে অংশ নেয়নি। তা হলে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেই অভ্যুত্থান হতো। বরং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করতেই অভ্যুত্থান হয়েছ।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান হয়েছে স্পষ্টভাবে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপের জন্য। বিদ্যমান ব্যবস্থার যদি সংস্কার করে দিতে না পারি, যে রাজনৈতিক সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এই স্বৈরাচারী ব্যবস্থার মধ্যে নিজেও স্বৈরাচার হতে বাধ্য হবে। সে কারণেই এই সংস্কারটা অত্যাবশ্যকীয়। দেশের জনগণ যেভাবে দেশকে গড়তে চাইবে, দেশ পুনর্গঠনের প্রস্তাব মানুষের মধ্য থেকে আসবে, সেটার বাস্তবায়ন করাই আমাদের দায়িত্ব হবে।’
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি সেটা এক দফারই অংশ, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। সেই আট দফার যে মূল অংশ ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ, সে বিলোপের জন্য যে সংস্কারগুলো অত্যাবশ্যকীয় সেগুলো করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এটা জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতেই হয়েছে।’
নতুন রাজনৈতিক দল খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনই রাজনৈতিক দল খোলার অভিপ্রায় আমাদের নেই। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যারা আছেন কারোই ক্ষমতার অভিলাষ নেই। সবার পেশাগত জীবন আছে, সবাই সেখানে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষকে যে দায়িত্বটা দিয়েছে, সেটি যথাযথভাবে পালন করে মানুষের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে বসা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিতভাবে বসছেন। এর বাহিরেও আন অফিসিয়ালি যোগাযোগ রাখছেন, যাতে আমাদের মাঝে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। দেশ পুনর্গঠনের এই যাত্রায় রাজনৈতিক দলগুলোসহ সকল অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক আব্দুর রহিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. হাবিব উল্লাহ, আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পুটিআইনেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান মাহফুজুর রহমান ভুঁইয়াসহ আরও অনেকে।