এবারও বোরকা পরে পালিয়েছে শামীম ওসমান: গিয়াসউদ্দিন
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানকে কাপুরুষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, ‘সে হচ্ছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর। সে ২০০১ সালের মতো এবারও তার নেতাকর্মী রেখে বোরখা পরে পালিয়েছে।’
আজ শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার জালকুড়ি কড়ইতলায় কাজী বাড়ি মাঠে কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যখন গত ষোল বছর আন্দোলন সংগ্রাম করছিলাম তখন যারা শামীম ওসমানের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তার ছেলে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইন্টারনেট, ভূমিদস্যুতা, তেল চুরি করে অর্থ সম্পদে বলিয়ান হয়েছে। এখন সেই তারাই ৫ আগস্ট থেকে এই ফতুল্লায় লুটপাট, সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করছে। তাদের কবল থেকে ছোট দোকানও রেহাই পাচ্ছে না। এদের সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ থেকে সুবিধা নিতে দলের চরম দুঃসময়ে দল থেকে সরে গিয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করেছে। সে নাকি এখন আবার বিএনপিতে ফিরতে চায়। ভুলেও না। সে এখন পচা মাল। এই মাল এখন আর বিএনপি খায় না।’
ষড়যন্ত্র করে যারা সভা বানচালের চেষ্টা করেছেন তাদেরকে বিড়াল হিসেবে আখ্যা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, ‘এতদিন সিংহের সঙ্গে লড়াই করেছি। ভয় পাইনি। বরং সে নিয়মিত আমার ভয়ে ভীত ছিল। এখন বিড়াল আমাকে ভেংচি দেয়। তাদের তওবা করতে হবে। তাদের বলব- এখন সময় আছে তওবা করে মূলধারায় ফিরুন। সন্ত্রাস-লুটপাট ছাড়ুন। মানুষের কল্যাণে কাজ করুন।’
তিনি বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে একটা পক্ষ নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল সভা বানচাল করার জন্য। আমি প্রশাসনকে বলেছি, আমি সভায় যাব, যদি কারো বাবার ক্ষমতা থাকে আমাকে বাধা দিতে বলবেন। আমার পুলিশ লাগবে না। আমার নিরাপত্তা লাগবে না। আমার জন্য আমার নেতাকর্মীই যথেষ্ট সেসব সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে। আর আমার জন্য আমার আল্লাহ আছে।’
গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনকে সবময় সহযোগিতা করতে হবে। ৫ তারিখ থেকে ফতুল্লায় যারা লুটপাট, ভাঙচুর চালিয়েছে তারা কারা আপনারা জানেন। তাদের তালিকা প্রশাসনকে দেবেন। না পারলে আমাদের দেবেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। আমি গিয়াসউদ্দিন অন্তত তাদেরকে ক্ষমা করব না। তারা মীরজাফার। তারা দলের সঙ্গে বেঈমানি করেছে, নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছে। নৌকা মার্কার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক হতে পারে না। আমি তাদের মুখে থু দিই।’
তিনি বলেন, ‘এখানে শ্রমিক দলের সভাপতি আছেন। তিনি বলেছেন কিছু মানুষ এখানে শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। সেই তারাই আজকের সভা বানচাল করতে চেয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সেদিন ফতুল্লায় বিএনপি একটি শান্তির মিছিল বের করলে একদল চাঁদাবাজ সেই মিছিলে হামলা চালিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেছে। এরা গত ৫ আগস্ট থেকে ব্যাপকভাবে লুটপাট, ভাঙচুর, চাঁদাবাজি করছে। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের পরিচয় তারা সন্ত্রাসী।’
কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনিপর সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন প্রমুখ।