‘তোমরা সবাই আইছো, আমার মাইয়ারে আইনা দাও’

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৫৫
শেয়ার :
‘তোমরা সবাই আইছো, আমার মাইয়ারে আইনা দাও’

‘তোমার এখানে সবাই আইছো, আমার মাইয়া কই। ওরা আমার মাইয়ারে জঘন্যভাবে মাইরা ফালাইছে। তোমরা আমার মাইয়ারে আইনা দাও।’ এভাবেই বিলাপ করেতে করতে কান্না করছিলেন নিহত অস্ট্রেলিয়ান নারী রেহানা পারভিনের মা আইরিন আক্তার।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজরাধানীর আশুলিয়ার একটি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নারী রেহানা পারভিনের মরদেহ। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল ও ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের অনুরোধে নিখোঁজ রেহেনার সন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।

এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদের উপস্থিতিতে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম নবাবগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি জানান এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- আমজাদ হোসেন (৬৪) ও পাপিয়া বেগম (৩৬)।

আশরাফুল আরও জানান, মূলত তিনটি কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এর মধ্যে পারিবারিক কলহ ও সম্পত্তির লোভ অন্যতম। রেহানা পারভিনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয় এবং মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে মাটিচাপা দেওয়া হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন।

রেহানা পারভিন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পাতিলঝাপ এলাকার লেহাজ উওদ্দিনের মেয়ে। ব্যারিস্টার হবার স্বপ্ন নিয়ে ২০ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই আওলাদ হোসেনকে বিয়ে করেন তিনি। গ্রহণ করেন দেশটির নাগরিকত্ব। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মা তিনি। বড় মেয়ে আহাদ নূরকে নিয়ে দেশে আসার পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। তদন্তের ধারাবাহিকতায় এবং মামলার চার দিনের মাথায় আশুলিয়ার মৌনদিয়া চৌরাপাড়া ননদের বাড়ির সেফটি ট্যাংকের আঙ্গিনায় থেকে উদ্ধার করা হয় রেহানা বেগমের অর্ধগলিত মরদেহ। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে তার মা আইরিন আক্তার নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

নবাবগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ জালাল, নবাগত ওসি মমিনুল ইসলাম, বারুয়াখালী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রমজানুল হকসহ আরও অনেকেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।