ত্রিশালে দেওয়ানবাগীর আস্তানা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ ও ত্রিশাল প্রতিনিধি
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:৪৯
শেয়ার :
ত্রিশালে দেওয়ানবাগীর আস্তানা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে দেওয়ানবাগী আস্তানার প্রধান ফটকসহ দু’টি গেট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা স্থানীয় উলামায়ে কেরামদের নিয়ে আলোচনায় বসেছেন।

আজ রবিবার ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে অবস্থিত দেওয়ানবাগী আস্তানা ভাঙচুর করতে সকাল থেকেই কাশিগঞ্জ বাজারে সমেবেত হতে থাকে স্থানীয় ও আশপাশের এলাকা থেকে আগত জনতা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেওয়ানবাগ আস্তানার দিকে রওনা হলে বাধা দেয় দায়িত্বরত সেনাবাহিনী। একপর্যায়ে বাধা উপেক্ষা করে আস্তানার দিকে রওনা করে আস্তানার মূল ফটকের সামনে গিয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে জনতা। পরে আস্তানার ভেতর থেকেও ইট-পাটকেল, মরিচের গুড়া, তীর ও গরম পানি নিক্ষেপ করতে থাকে দেওয়ানবাগ সমর্থকরা।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদের কাছে তাওহীদি জনতা তিন দফা দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে দেওয়ানবাগীর আস্থানায় কুফুর-শিরিক ও বিদআত কার্যক্রম ও উচ্চস্বরে মাইক চালানো যাবে না এবং স্থায়ীভাবে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। আস্তানার ভেতরে থাকা অবৈধ দেশীয় ও অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে, অনতিবিলম্বে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার এবং তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় নির্মাণ করা ‘বাবে বরকত দেওয়ানবাগ’ নামীয় তোরণটি ভেঙে দিতে হবে।

উপজেলা প্রশাসন এসব দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ, মেজর আল আমিন, ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল্লাহেল বাকী নোমান, ইসলামী আন্দোলন ত্রিশালের সভাপতি মাওলানা ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফসিউর রেজা, ইত্তেফাকুল উলামা ত্রিশালের সভাপতি মাওলানা এখলাস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মুফতি জহিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে সামনে রেখে বিকেলে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে জরুরি মতবিনিময় সভা আহ্বান করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় ত্রিশালের সকল স্তরের আলেম সমাজ, মসজিদের ইমাম, খতিব, রাজনৈতিক নেতারা ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ‘তৌহিদী জনতা হামলা চালানোর পরিকল্পনায় তারা দেওয়ানবাগীর আস্তানার দিকে যাওয়া শুরু করলে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে তাদের ছাত্রভঙ্গ করা হয় এবং পরে তাদের সাথে আলোচনায় বসে দাবি পূরণের আশ্বাস প্রদান করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘পরিস্থিতি সমাল দিতে স্থানীয় আলেম-উলামা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলোচনা করা হয়। তারা তিনটি দাবি পেশ করে। দাবিগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়।’