সুফিয়ান-এনামসহ বিএনপির তিন নেতাকে শোকজ
এস আলম গ্রুপের বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির তিন নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়া বিএনপির এই নেতারা হলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়া।
বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, 'আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে শোকজের জবাব দিতে (কারণদর্শাতে) বলা হয়েছে।'
এদিকে, এস আলম গ্রুপের গাড়ি বের করে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ দাবি করেন তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জার টেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের ওয়্যার হাউজে ফ্যাক্টরি থেকে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক ভাইরাল হয়।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্তত ১৫ জনের একটি দল এস আলম গ্রুপের ওয়্যারহাউজের সামনে আসে। একই সময়ে আরো তিনটি গাড়ি সেখানে পৌঁছে। সেখানে গাড়ি থেকে একে একে নামেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের ছেলের শ্বশুর মীর গ্রুপের আবদুস সালাম বিএনপি নেতা এনামুল হক এনামের মামাতো ভাই।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, একটি গাড়ি থেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের ড্রাইভার মনসুরকে নামতে দেখা যায়। সে গাড়ির ভেতরে আবু সুফিয়ান বসেছিলেন। নইলে ওয়্যারহাউজে তার ড্রাইভারের আসার কথা নয়। নাম প্রকাশে একজন জানান, কিছুক্ষণ পরই আমরা বুঝতে পারি শুরুর দিকে আসা ১৫ জনের পুরো দলটিই ছিল মূলত ড্রাইভার। কারণ তাদের একেক জনকে একেকটি গাড়ির চালকের আসনে বসানো হচ্ছিল। এভাবে আমরা অন্তত ১৪টি গাড়ি নিয়ে যেতে দেখেছি।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিলাসবহুল গাড়িগুলোর সবকটি বের হওয়ার পরই এনামসহ বাকি সব নেতা ওয়্যারহাউজের সামনে থেকে সরে যান।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
ঐ প্রত্যক্ষদর্শীর আরও বলেন, ‘গাড়ি শুধু নয়, গাড়িগুলোর ভেতরে কিছু একটা ছিল। আমাদের ধারণা, সেখানে বিপুল অঙ্কের টাকা ছিল। শুধু গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপির শীর্ষনেতাদের সেখানে সশরীরে আসার কথা নয়।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তবে গাড়িগুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারেননি। তবে তারা জেনেছেন, গাড়িগুলো সীতাকুণ্ডের দিকে গেছে। কিন্তু চূড়ান্ত গন্তব্য কোথায় ছিল, সেটা তারা জানতে পারেননি।