বাঙালিরাই আজ আমাকে ট্রল করছে: নচিকেতা
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের লেখা একটি কবিতা পাঠ করেন নচিকেতা। সেই কবিতা নিয়ে শিল্পীকে নিয়ে শুরু হয় ট্রোলিং।
গত ১৪ আগস্ট ফেসবুকে তিনি ‘মা তুমি এসো না’ শীর্ষক কবিতাটি পাঠ করেন।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমকে নচিকেতা বলেন, ‘প্রথম প্রতিবাদ তো আমিই করেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, কারও পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ না করলে ট্রোলিং শুরু হবে!’
এ শিল্পীর মতে, প্রতিবাদ কী ভাবে করা উচিত, সেটা একান্তই ব্যক্তির নিজের উপর নির্ভর করে। তার ভাষ্য, ‘সেখানে আমাকে শুনতে হচ্ছে, আমি কেন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছি না! বাঙালির এই চেহারা আমার দেখা ছিল না।’
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে রাস্তায় নেমে আসা প্রসঙ্গ উত্থাপন করে নচিকেতা বলেন, ‘এত বছরে রাস্তায় নেমে আমার সারা শরীরে ধুলো জমে গিয়েছে। এখন বয়স হয়েছে। তা ছাড়া আমি কোনও রাজনীতিও করি না।’
প্রতিবাদে মিছিলে হেঁটেছেন, এমন ব্যক্তিত্বদের নিয়েও ট্রোল হয়েছে বলে মনে করিয়ে দিলেন নচিকেতা। উদাহরণ হিসেবে তিনি অপর্ণা সেনের নাম উল্লেখ করলেন। এ বিষয়ে নচিকেতার উপলব্ধি, ‘আসলে ওরা সমাজ থেকে শিক্ষিত মানুষকে সরিয়ে দিতে চাইছে!’
‘বৃদ্ধাশ্রম’ থেকে শুরু করে নচিকেতার একাধিক গানে রয়েছে বেশ প্রতিবাদী ভাষা। আর জি কর-কাণ্ডে মানুষ যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ করছেন, তা দেখে আপ্লুত এ শিল্পী।
নচিকেতা আক্ষেপ করে বলেন, ‘৩১ বছর যে বাঙালির জন্য নিজেকে সঁপে দিলাম, সেই বাঙালিই আজ আমাকে ট্রোল করছে! আমি সত্যিই দুঃখ পেয়েছি।’
আরজি করের ঘটনার পর ২০ দিন অতিক্রান্ত। বিপরীতে প্রতিবাদ আন্দোলনে রাজনীতি ক্রমশ অন্য দিকে ডানা মেলছে বলে উল্লেখ করেন নচিকেতা।
আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে। সুপ্রিম কোর্ট সেখানে নির্দেশ দিয়েছে। তার পরেও রাজ্য জুড়ে হিংসা এবং ভাঙচুরকে ‘লাশের রাজনীতি’ হিসেবেই আখ্যা দিতে চান নচিকেতা।
নচিকেতার মতে, এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আরজি কর থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই দিগ্ভ্রষ্ট হলেই মুশকিল।
দ্রুত ন্যায়বিচারের পক্ষে নচিকেতা বলেন, ‘কেন দেরি হচ্ছে, বুঝতে পারছি না। সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা পাচ্ছেন না। তাদের সর্বস্ব দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে! তাই দ্রুত বিষয়টার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
সাধারণ মানুষের উপর সাংস্কৃতিক প্রভাব কাজ করছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তো মানুষের বোধের উন্নয়নের জন্য গান করেছি। কিন্তু দেখলাম, মানুষের বোধের কোনও উন্নতি হয়নি। তা না হলে, একটি মেয়ের সঙ্গে এ রকম নারকীয় ঘটনা ঘটতে পারে না।’
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট