যেভাবে পশ্চিম তীর দখল করছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩০ আগস্ট ২০২৪, ১৪:২৪
শেয়ার :
যেভাবে পশ্চিম তীর দখল করছে ইসরায়েল

ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে একটা হলো ফিলিস্তিনের বাত্তির। সেখানকার জলপাই বাগান এবং আঙুরক্ষেতের জন্য পরিচিত এই গ্রাম। এখানে প্রাকৃতিক ঝর্ণার জল ব্যবহার করা হয় সেচের কাজে। কয়েক শতাব্দী ধরে এইভাবেই জীবন বয়ে চলেছে সেখানে। প্রকৃতির কোলঘেঁষা এই গ্রামই অধিকৃত ‘ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক’ বা পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের সর্বশেষ ‘ফ্ল্যাশপয়েন্টে’ পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েল এখানে একটা নতুন অবৈধ বসতি স্থাপন বা ‘সেটলমেন্ট’-এর অনুমোদন দিয়েছে। এই নতুন বসতির জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি। শুধু তাই নয়, অনুমোদন ছাড়াই নতুন ইসরায়েলি ফাঁড়িও স্থাপন করা হয়েছে।

যাদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি এই নতুন বসতি স্থাপনের জন্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদের তালিকায় রয়েছে ঘাসান ওলিয়ান। তিনি বলেন, “নিজেদের স্বপ্ন গড়তে আমাদের জমি চুরি করছে ওরা।”

ইউনেসকো জানিয়েছে বাত্তিরকে ঘিরে বসতি স্থাপনকারীদের পরিকল্পনা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। তবে এই গ্রাম কিন্তু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ জাতীয় ‘সেটলমেন্ট’কে অবৈধ হিসেবে দেখা হয়। যদিও এই বিষয়ে ইসরায়েল সহমত পোষণ করে না।

গত সপ্তাহে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা প্রধান রোনেন বার মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে একটা চিঠি লিখে তাদের সতর্ক করেছিলেন। সেই চিঠিতে বার উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিম তীরের ইহুদি চরমপন্থীরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ কাজ চালাচ্ছে এবং দেশের ‘অবর্ণনীয় ক্ষতি’ করছে।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই কিন্তু অধিকৃত পশ্চিম তীরে দ্রুত বসতি স্থাপন হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিজেদের ‘লক্ষ্য’ পূরণের জন্য গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাইছে এই চরমপন্থীরা।

বসতি স্থাপনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণকারী ইসরায়েলি সংস্থা ‘পিস নাও’-এর ইয়োনাতান মিজরাহি বলেছেন, “ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের চরমপন্থী ইহুদিরা ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসান ঘটানোর বিষয়টাকেও কঠিন করেছে।”

পিউ রিসার্চ সেন্টারের জুন মাসের একটা সমীক্ষা বলছে ৪০% ইসরায়েলের মানুষ বিশ্বাস করেন যে এই বসতি স্থাপন তাদের দেশকে নিরাপদ করেছে। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৭%।

অন্যদিকে জুন মাসের ওই জরিপে অংশ নেওয়া ৩৫ শতাংশ মানুষ আবার মনে করেন, বসতি স্থাপনের কারণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের জরিপে ওই পরিসংখ্যান ছিল ৪২%।