তড়িঘড়ি নির্বাচন ভালো ফল বয়ে আনবে না: আলী রিয়াজ
তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করলে তা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক ও সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) অ্যাডভাইজরি বোর্ডের সদস্য ড. আলী রিয়াজ। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ভাবনার অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন ঘোষণা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিজিএস।
সংবাদ সম্মেলনে ড. আলী রিয়াজ বলেন, ‘শুধু সরকারের ওপর নির্ভর না করে নিজ নিজ জায়গা থেকে সবার দায়িত্ব পালন করা আবশ্যক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এযাবৎকালে যত অপতথ্য বা গুজব ছড়িয়েছে, তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সত্য ও প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন। তাদের অপপ্রচারণার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
গত ১৫ বছরে যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মদান করেছেন এবং মধ্য জুলাই থেকে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের স্মরণ করে ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন এবং ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ অভ্যুত্থানে ৭৫০-এর বেশি প্রাণহানি হয়েছে এবং দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশাল পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। বিগত সময়ে এমন সব নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, যা জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মুনাফা অর্জনের উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছে। ঋণ খেলাপিদের বিচার থেকে রক্ষা করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে কার্যত বিপদাপন্ন করেছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজন এবং দেশকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফেরানোর পাশাপাশি সংবিধানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। গণজাগরণের মাধ্যমে তৈরি হওয়া এই আশা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে সরকারের ওপর বিশাল দায়িত্ব আরোপিত হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন প্রয়োজন। একজন আবু সাঈদ দেখিয়ে দিয়েছেন, সাহস করে এগিয়ে এলে সবকিছুই অর্জন সম্ভব। সাংবাদিকতাকে সম্মানীয় পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। দলীয়করণের মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে, একই সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংস্কার নয়, গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের প্রতি আমাদের বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সব রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতেই আমরা সবার কথা শুনতে চাই।’