গৃহবধূর মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী-শাশুড়ি

অনলাইন ডেস্ক
২৯ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫৫
শেয়ার :
গৃহবধূর মরদেহ পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী-শাশুড়ি

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ নিহতের বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি।

আটকরা হলেন রায়হান পারভেজ (৩৫) ও তার মা আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনার রুপসা থানার আইচগাতি গ্রামে।

গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদের আটক করে কাশিয়ানী থানা পুলিশ।

নিহত সাবিকুন্নাহার ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে। গত মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাড়া বাসায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে সাবিকুন্নাহারের ছোট ভাই সোহাগকে তার স্বামী রায়হান পারভেজ ফোন করে জানান, সাবিকুন্নাহার অজ্ঞান হয়ে গেছেন। খবর পেয়ে সাবিকুন্নাহারের বড় ভাই ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে সাবিকুন্নাহার মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

এরপর দুপুর ২টার দিকে মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাবিকুন্নাহারের বাবার বাড়ি কাশিয়ানীর শংকরপাশায় পৌঁছান। চলে মরদেহের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তার স্বজনরা। এতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে মরদেহের সঙ্গে আসা লোকজনকে আটক করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাদের দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে নিহতের মা রিজিয়া বেগম জানান, দেড় বছর আগে সাবিকুন্নাহারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তার স্বামী রায়হান পারভেজ একটি কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত ছিলেন। সাবিকুন্নাহার তার স্বামী ও পাঁচ মাস বয়সী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ওখানে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তবে প্রায়ই ঝগড়া হতো। টাকা-পয়সা চেয়ে সাবিকুন্নাহারকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন।

রিজিয়া বেগমের অভিযোগ, সাবিকুন্নাহারকে শ্বাসরোধে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ও শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে।’

তিনি আরও জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।