এস আলমের সম্পদ কাউকে না কেনার আহ্বান গভর্নরের
এস আলমের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। তাই কেউ যাতে তাদের সম্পদ না কেনে এমনটাই আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
আজ বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
ব্যাংকে বন্ধক নেই এমন সম্পত্তি বিক্রি করার চেষ্টা করছে এস আলম গ্রুপ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘এটা আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। আমরা সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলবো। আর এই গ্রুপের সম্পদ যেন কেউ না কেনে। এ সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এস আলম ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি যে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যাংক লুট করেছে। এমন সুপরিকল্পিতভাবে পৃথিবীতে কেউ ব্যাংক ডাকাতি করেছে কি-না তা জানা নেই।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
ব্যাংকিং কমিশন গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং কমিশন গঠন করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক সেটায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মাসখানেকের মধ্যে এটা করা হবে। বিদেশি এক্সপার্ট নেওয়া হবে। শ্রীলঙ্কা কীভাবে করেছে সেটাও দেখা হবে।’
ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের নতুন বোর্ডকে কর্ম পরিকল্পনা দিতে বলেছি। এখানে কাজ করতে হবে, বসে থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের সহায়তা করবে। তারা সহায়ক ভূমিকা পালন না কিরলে বোর্ড আবার চেঞ্জ করা হবে। সবাইকে নজরদারি করা হচ্ছে। অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
এস আলম ছাড়া ব্যাংক খাতে আরও যে মাফিয়া রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘অন্যদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডলার রেট যেহেতু একটা স্ট্যাবেল পর্যায় রয়েছে, এমন পর্যায় থাকলে আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে কমে আসবে। বন্যা যদিও একটু দুশ্চিন্তা তৈরি করছে। তাও আশাবাদী ২-১ মাস বেশি লাগতে পারে।’
তিনি জানান, রিজার্ভ থেকে এখন ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। তাই রিজার্ভ কমার সম্ভবনা নেই। আগামীতে আরও বাড়বে। সরকারের চাহিদা আন্তঃব্যাংক মার্কেট থেকে মেটানো হচ্ছে।
সাবেক দুই গভর্নরের বিষয় তিনি বলেন, ‘এখানে সুশাসনের অভাব ছিল। সামনে যে হবে না তেমন নয়। তবে আমার হাত দিয়ে হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও সংস্কার করতে হবে। কারণ তারাও দায় এড়াতে পারে না।’
আমানতকারীদের উদ্দেশ্যে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘গ্রাহকদের বলব, ধৈর্য ধরেন। একবারে সবাই টাকা তুলতে যাবেন না। তাহলে কেউ টাকা দিতে পাড়বে না। অনেকে অতিরিক্ত সুদের লোভে এসব ব্যাংকে টাকা রেখেছেন। এখন অধৈর্য হলে হবে না। আমানতের টাকা লস হবে এটা আমরা চাই না। আমরা টাকা ছাপিয়ে কোনো আমানতের টাকা দেব না। কারণ সেটা জাতির জন্য ভালো হবে না। তখন মূল্যস্ফীতি ১০০% হয়ে যাবে। যেটুকু টাকা না তুললে নয়, সেটা তোলেন। ৫/৬ মাস পর অবস্থা পরিবর্তন হবে।’
বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত কোনো ডিপোজিটর টাকা হারায়নি। ব্যাংকে আগে সুশাসন ফেরাতে হবে, যাতে আমানতকারিদের আস্থা ফিরে আসে।