দাবি বাস্তবায়নে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ আগস্ট ২০২৪, ২১:২৮
শেয়ার :
দাবি বাস্তবায়নে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিত করায় দুই দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনরত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। গতকাল রবিবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সপ্তাহে ৭ দিন দিনে ২৪ ঘণ্টা রোদ, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের ৮০ ভাগ অঞ্চলের প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দ্বৈতশাসন, বৈষম্য ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল অনিয়মিত/চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।‌ দাবি আদায়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল ও গ্রাহক সেবা চালু রেখে সারাদেশে একযোগে গত ৫ মে থেকে টানা ৫ দিন কর্মবিরতির ফলশ্রুতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৮ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষরসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে দাবি পেশ করা হয়। 

সন্তোষজনক ফলাফল না আসায় পুনরায় গত ১ জুলাই থেকে টানা ১০ দিন কর্মবিরতির ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব, তিনজন অতিরিক্ত সচিব, আরইবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আরইবি-পবিস একীভূতকরণ/রিফর্ম এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ আরইবি-পবিস একীভূতকরণ/রিফর্ম এখন সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। 

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুনরায় আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ গত ২২ আগস্ট পূর্বগঠিত কমিটির সভা আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আরইবির সকল প্রতিনিধি অনুপস্থিত থাকেন। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ফলে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজমান থাকায় আরইবির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সমিতি থেকে সকল প্রকার তথ্য সরবরাহ তথা আরইবির সঙ্গে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেশাজীবী হিসেবে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের প্রতি শতভাগ জনবলের ঘৃণা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। চলতি বছরের প্রথম থেকে উৎপত্তি হওয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চলমান আন্দোলন কোন বেতন-ভাতা কিংবা আর্থিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়, আরইবির দ্বৈতনীতি/দ্বৈতশাসন থেকে মুক্তি, বিদ্যুৎ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং একটি টেকসই, আধুনিক ও গ্রাহক বান্ধব বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা গড়ার আন্দোলন। দীর্ঘদিন ধরে সুশৃঙ্খলভাবে গ্রাহক সেবা চালু রেখে নানান কর্মসূচি পালন করলেও সংশ্লিষ্টমহল কার্যকর সমাধানের বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এমতাবস্থায়, আরইবি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে পূর্ব ঘোষিত ২ দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ন্যায্য দাবি প্রতিহত করে কর্মপরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত আরইবির কতিপয় উশৃঙ্খল, দুষ্কৃতিকারী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তি নিশ্চিতপূর্বক সঠিক ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদয় হস্তক্ষেপ এবং ছাত্র-জনতার সহযোগিতা কামনা করছি। অন্যথায়, সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে স্টেশন ত্যাগ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটি প্রয়োজনে গণপদত্যাগ কর্মসূচি ঘোষণা করা ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। ফলে দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।