৩৮৮ আনসার সদস্যকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন

আদালত প্রতিবেদক
২৬ আগস্ট ২০২৪, ১৭:০৯
শেয়ার :
৩৮৮ আনসার সদস্যকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন



চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর ও হামলার মামলায় ৩৮৮ জন আনসার সদস্যকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ। আজ সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

রিমান্ড আবেদন না থাকায় তাদের আদালতের এজলাসে ওঠানো হয়নি। এর মধ্যে কয়েকজনের কারাগারে আটক রাখার আবেদনের ওপর শুনানি হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার ১৮৯ জন, রমনা থানার মামলায় ৯৮ জন, পল্টন থানার মামলায় ৯৫ জন ও বিমানবন্দর থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো ছয়জন আনসার সদস্যকে আদালতে আনা হয়েছে। এ চার থানার মামলায় অন্তত ৪২৬ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া মামলাগুলোয় আনসারের অন্তত ৩ হাজার সদস্যকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলাগুলোয় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩২৩/৩২৫/৩৫৩/৪২৭/৪৩৫/৪৩৬/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গতকাল রবিবার রাত ৯টার সময় বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় কিছু আনসার সদস্যরা পল্টন মডেল থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। পুলিশ তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধ অমান্য করে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এ ছাড়া অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো একটি কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু সাধারণ আনসাররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ করে দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

বাংলাদেশের সাধারণ আনসাররা একটি সু-শৃঙ্খলিত আনসার বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশ সচিবালয় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা কেপিআই জানা সত্ত্বেও আনসার সদস্যরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থলে আসলে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অসংখ্য পথচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা গুরুতর আহত হয়।

উক্ত আনসার সদস্যরা রাস্তার উপর আগুন ধরিয়ে দেয় এবং রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা, অগ্নি-সংযোগ ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাঙচুর করে।