দুধ দিয়ে গোসল করা সেই ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি ছাত্র-জনতার

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
১৮ আগস্ট ২০২৪, ১৯:১৬
শেয়ার :
দুধ দিয়ে গোসল করা সেই ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি ছাত্র-জনতার

দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করা সেই ভাইরাল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ ছাত্র-জনতা। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের খলিলপুরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন তারা। নাহলে ইউপি ভবন ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিবেন বলে ঘোষণা দেন তারা। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল দল উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ গত শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে দল ত্যাগের ঘোষণা দেন এবং দুধ দিয়ে গোসল করে নিজেকে পবিত্র করেন।

এ খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ছাত্র-জনতা। রবিবার সকাল থেকে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। সেখানে তারা সকাল সাড়ে ১১টায় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ওই চেয়ারম্যানকে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। না হয় ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা করেন তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুঁটে যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল দল।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো. সজিব, মোহাম্মদ মাহফুজ, গোলাম মোস্তফা, মাজহারুল ইসলাম, সোহাগ মিয়া, রাকিব ও হাসান প্রমুখ।

ছাত্ররা বলেন, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য মাসুদ চেয়ারম্যান নিজেই ইট ভেঙে ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করেছেন। এই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি এখন সময় খারাপ দেখে দুধ দিয়ে গোসল করে দল ত্যাগ করছেন, আগে কি করেছিলেন। এখন ছাত্র-জনতার একটাই দাবি ওই চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করতে হবে। না হয় আরও কঠিন আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট আমাকে দলের সিনিয়র নেতারা ভুল বুঝিয়ে দেবিদ্বারে নিয়ে গেছে। তারা আমাকে বলেছেন, দেশে যেসব ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে শোক র‌্যালি করা হবে। সেখানে গিয়ে দেখলাম ছাত্র-জনতার সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। আমি দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে গিয়েছিলাম, আমি কাউকে ইট পাটকেল মারিনি। আমার সাথে নির্বাচনে পরাজিত শক্তি ও নুরপুরের সাজিদ হত্যাকারীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা দুপুর ২টা পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে সকাল থেকেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের টিম রাখা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।