৭ দিনের মধ্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সাজা-মামলা বাতিলের দাবি

অনলাইন ডেস্ক
১৭ আগস্ট ২০২৪, ২০:০৯
শেয়ার :
৭ দিনের মধ্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সাজা-মামলা বাতিলের দাবি

আগামী ৭ দিনের মধ্যে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান ও মিসেস মাহমুদুর রহমানের বিরদ্ধে পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের দেওয়া ফরমায়েশি সাজার রায় বাতিল এবং প্রেস খুলে দেওয়াসহ পত্রিকা প্রকাশের সব অন্তরায় দূর করার জন্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাংবাদিক ও পেশাজীবীরা। একই সঙ্গে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে কর্মীদের দীর্ঘ প্রায় একযুগ বেকার রাখা এবং পত্রিকার প্রেস জব্দ করে রেখে যন্ত্রপাতি বিনষ্ট ও লুটপাটের ক্ষতিপুরণ প্রদানের দাবি জানান তারা। 

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতারা এ দাবি জানান। 

সামাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশের নগর সম্পাদক এম আবদুল্লাহ। 

এতে বক্তব্য দেন বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, বর্তমান সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, শিক্ষক নেতা ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীল আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, কষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএফইউজের সহসভাপতি এ কে এম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, প্রচার সম্পাদক শাহজাহান সাজু, মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী, ইংরেজী দৈনিক ইকোনমিক এক্সপ্রেসের সম্পাদক আমীর হোসেন জনি, বিশিষ্ট প্রকাশক মুনীরুজ্জমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, দৈনিক আমার দেশ গণমানুষের কন্ঠস্বর হয়ে উঠেছিল। মাহমুদুর রহমানের সাহসী নেতৃত্বে পত্রিকাটি যখন জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে উঠে তখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার তা বন্ধ করে দেয়। মাহমুদুর রহমানকে বারবার গ্রেপ্তার, রিমাণ্ড, হামলা, মামলা করে তার জীবনকে বিপন্ন করে তুলে। মাহমুদুর রহমানের মতো নির্ভিক সম্পাদক সমসাময়িককালে আর দেখা যায়নি। 

ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে পালাতে বাধ্য হওয়া আওয়ামী সরকার আপনার বিরুদ্ধেও অনেক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমরা পেশাজীবী ও সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদ জানিয়েছি। আপনার সাজা বাতিল হয়েছে, মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। আশাকরি মাহমুদুর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও মামলা বাতিলে আপনি উদ্যোগ নেবেন। দৈনিক আমার দেশ প্রকাশের পথ সুগম করবেন।’ 

রুহুল আমিন গাজী বলেন, মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশ পত্রিকার অপরাধ হাচ্ছে তারা সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করেছেন। সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এ জন্যে আওয়ামী স্বৈরসরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে তাদের। তিনি অবিলম্বে সাজা বাতিল করে মাহমুদুর রহমানের দেশে ফেরার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের নির্মম শিকার। এমন জুলুম কোনো সম্পাদক বা সাংবাদিকের ওপর হয়! তাকে হত্যা করার জন্যে বারবার হামলা করা হয়েছে। ১২৪টি মামলা দিয়ে আদালতে বারান্দায় ঘুরিয়েছে। বানোয়াট অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হওয়ার পরও মাহমুদুর রহমান প্রতিকার না পাওয়া দুঃখজনক। 

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে মাহমুদুর রহমানের সাজা বাতিল, তার স্ত্রীর সাজা বাতিল, মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং প্রেসের তালা খুলে দেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন।

এম আবদুল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তাদের গদি পাকাপোক্ত করার জন্যে প্রথমেই দৈনিক আমার দেশকে টার্গেট করে। কারণ আমার দেশ সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দুর্নীতি, লুটপাটের সংবাদ প্রকাশ করছিল। ২০১০ সালের জুনে প্রথমে দফায় আমার দেশ বন্ধ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কমান্ডো স্টাইলে অভিযান চালিয়ে তুল নিয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল গায়ের জোরে দ্বিতীয় দফায় আমার দেশ বন্ধ করে মাহমুদুর রহমানকে ধরে নিয়ে যায়। দিনের পর দিন রিমান্ডে নির্যাতন চালানো হয়। 

তিনি বলেন, ‘গত ১১ বছর যাবত আমার দেশের কর্মীরা বেকারত্ব নিয়ে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে বানোয়াট মামলায় মাহমুদর রহমানকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রীকেও ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই নিপীড়নের বিচার চাইতে আজ আমরা রাজপথে নেমেছি।’