বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ, একজনকে কুপিয়ে হত্যা
কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিএনপির এক সমর্থককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা। আজ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলা ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বিএনপি সমর্থকের নাম ছিদ্দিকুর রহমান (৪৫)। তিনি উপজেলার সাইচাপাড়া গাবুদ্ধি বাড়ির মৃত আ. কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। ছিদ্দিকুর পেশায় অটোচালক ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, সকালে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় অন্তত দুই পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ছিদ্দিকুর রহমানকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছিদ্দিক বিএনপির সমর্থক বলে দাবি করেন পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন, মামুন ভূঁইয়া ও মো. আয়েজ মিয়া জানান, গত ৫ আগষ্ট হাসিনার পদত্যাগের পর এলাকার ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ আনন্দ মিছিল বের করেন। আনন্দ মিছিলের একপর্যায়ে সাইচাপাড়া বাজারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদের ছবি ভাঙচুর করেন। ছবি ভাঙচুরের ঘটনার জেরে দুই দিন পর গাবুদ্ধি বাড়ির সামাউল নামে এক ছাত্রকে এলোপাতারি মারধর করে আমির মেম্বারের ছেলে জুয়েল ও তার লোকজন। পরে সামাউলের লোকজন দেবিদ্বার থানায় আমির মেম্বার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
তারা জানান, থানায় অভিযোগ দেওয়ার খবর পেয়ে আমিরের লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ ঘটনা মিমাংসার জন্য স্থানীয় ময়নাল হাজারীর মধ্যস্থতায় শুক্রবার সকাল ৮টায় সাইচাপাড়া বাজারে দুই পক্ষের সালিস বৈঠক ডাকেন। বাজারের সালিস বৈঠকে গাবুদ্ধি বাড়ির চারজন মুরুব্বি উপস্থিত হলে আমির মেম্বার তার ২০ থেকে ৩০ জন লোক নিয়ে ওই সালিস বৈঠকে উপস্থিত হয়ে গাবুদ্ধি বাড়ি থেকে আসা চারজন সালিসদারকে মারধর করেন। সালিসে মারধরের খবর পেয়ে গাবুদ্ধি বাড়ির ৪৫-৫০ জন জড়ো হয়ে বাজারে এলে আমির মেম্বার ও লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
তারা জানান, সংঘর্ষে আমিরের লোকজন প্রকাশ্যে ছিদ্দিকুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত আমির হোসেন মেম্বার বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। এখন শত্রুতা করে সবাই আমার নাম বললে আমি কি করব। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণপাড়ায় আছি।’
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর আনন্দ মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় আমির মেম্বারের অফিস ভাঙচুরের ঘটনার ঘটে। আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে একটি সালিস বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ছিদ্দিক নামে বিএনপির এক সমর্থক নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম রয়েছে।