১১ দিন হয়ে গেল অথচ জুবায়েদ জানেই না তার বাবা নেই
বাবা নির্ভরতার প্রতীক, ভালবাসারও নাম। ৪ বছরের শিশু জুবায়েদের কাছে বাবাই যেন সব। সেই বাবা নেই আজ ১১ দিন হয়ে গেল অথচ এখনও বুঝতে পারেনি তার বাবা আর নেই। তার আশা বাবা আসবে! বাবার কথা বলতেই বলেন, ‘বাবা এখন অফিসে, রাতে আসবে, আমার সাথে ঘুমবে। ’ প্রতিদিন রাতে বাবার জন্য অপেক্ষা করে ঘুমতে যায় সে, নিজের বালিশের পাশে সাজিয়ে রাখে বাবার বালিশটাও, এভাবেই অপেক্ষার প্রহর যেন প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ অবুঝের।
ছাত্রজনতার গণঅভুথ্যানে শেখ হাসিনার পতনের দিন গত ৫ জুলাই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গুলিতে নিহত হন জুয়েল মিয়া। জুয়েল যুবদলের কর্মী ছিলেন। সরকার পতন আন্দোলনের প্রথম থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিয়েছিল। তার ভাইরা ভাই যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম সরকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনের সারি থেকে।
জুয়েল ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার মিংধই কাকদাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিন মেয়ে দুই ছেলের মধ্যে জুয়েল বড়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা গ্রামে বসবাস করে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
জুয়েলের বাবা আব্দুল হাই বলেন, ‘জুয়েল ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়েই তাদের সংসার চলত। হঠাৎ করে জুয়েলের মৃত্যুতে পুরো পরিবার দিশেহারা। সামনে এখন অজানা পথ তাদের। ’
তিনি আরও বলেন, ‘১৬ বছর আগে জুয়েল বিয়ে করেন। বিয়ের ১২ বছর পর জুবায়েদের জন্ম হয়। বাবার খুব আদরের ছিল জুবায়েদ। অথচ সে এখনও বুঝতেই পারছে না তার বাবা নেই। জুয়েলের খুব ইচ্ছে ছিল ছেলেকে ইসলামী স্কলার বানাবে, এখন ছেলের ভবিষ্যত নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।’
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘জুয়েল তার কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার হটানোর আন্দোলনে নিয়মিত অংশ নিতেন। সে ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে মাওনা পল্লীবিদ্যুৎ মোড়ে দায়িত্বপালন কালে বিজিবির গুলিতে নিহত হয়। এ পরিবারটির সামনে এখন অন্ধকার। শ্যালিকাসহ এ শিশুটি এখন তার আশ্রয়েই আছে। ’