ভেঙে পড়েছে ঢাকার দুই সিটির সেবা

শাহজাহান মোল্লা
০৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
ভেঙে পড়েছে ঢাকার দুই সিটির সেবা

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস দেশত্যাগ করেছেন। তিনি আর ফিরবেন কিনাÑ তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যেহেতু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ রয়েছে, তাই জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মেয়র তাপস আগামী কয়েক মাসের জন্য আর দেশে নাও ফিরতে পারেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ঠিক কোথায় রয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনি দেশ থেকে পালাননি বলেই জানা গেছে।

ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন, সিটির উন্নয়ন কার্যক্রম এখন আর সচল নেই। শুধুমাত্র অফিস পাহারা দেওয়ার জন্য কিছু লোক নিয়মিত আসছেন। কিছু দিন আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট দিয়েছেন মেয়র তাপস। সেই বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে এখন বড় সংশয় দেখা দিয়েছে। বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দ দিতে হলে মেয়রের অনুমতি প্রয়োজন হয়।

শুধু তাই নয়, দুই সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররাও নিরাপত্তা হুমকিতে থাকায় আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে তারাও কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিতে পারছেন না। অন্যদিকে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিচ পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত। তাই তারাও নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় অফিস করছেন না।

জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর তাদের দিকনির্দেশনা পেলে আবার সক্রিয় হতে পারে দুই সিটি করপোরেশন। এছাড়া সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও বন্ধ রয়েছে।

আতিকুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, যাব কোথায়? আমিতো কোনো অন্যায় করিনি। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করিনি। দেখি কী হয়। সবকিছু দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেব। দক্ষিণ সিটির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে

আমাদের সময়কে বলেন, অফিস নামমাত্র খোলা রয়েছে। আমরা অল্প কয়েকজন অফিস করি। মেয়র না থাকায় কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। সাধারণত কোনো ফাইলের অনুমোদন নিতে হলে মেয়রের অনুমতি লাগে। তিনি আরও বলেন, দেশের যে অবস্থা, তাতে মেয়র আর ফিরবেন না। জীবনের ঝুঁকি তিনি নেবেন না। শেখ পরিবারের প্রতি মানুষের যে ক্ষোভ, তাতে তাকে অফিসে পেলে হয়তো আঘাত করবে। এটা জেনেই তিনি পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই ভাগছেন।

উত্তর সিটির সচিব মাসুদ আলম আমাদের সময়কে বলেন, অফিস খোলা হয়েছে, কিন্তু কোনো কার্যক্রম নেই। এমনকি আমাদের বেতন-ভাতাও হচ্ছে না। যে কোনো ফাইল পাস করাতে হলে মেয়রের অনুমতি লাগবে। অনেক ফাইল জমে গেছে। এভাবে কতদিন চলবে কে জানে।