‘আয়নাঘরে’ ফেলা চোখের পানিতে দীঘি হতো, জানালেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আজমী
‘আয়নাঘর’ নামক গোপন বন্দিশালায় যে পরিমাণ চোখের পানি ফেলেছেন তা দীঘির সমান বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের মেজো ছেলে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তাকে এ কথা বলতে শোনা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন আবদুল্লাহিল আমান আযমী। এ সময় তার কাছে কয়েক জন স্বজন দেখা করতে যান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ‘আমাকে যে মানুষ এত ভালোবাসে আমি জানতাম না। জালিমদেরকে হেলিকপ্টারে করে পালাতে হয়েছে।’
একটি গামছা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গামছায় দিঘীর সমান পানি হতো।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তখন সেখানে থাকা এক স্বজন তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই গামছায় কী করেছ?’ এমন প্রশ্নে আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ‘প্রথমে আমি এইটা নিছি গরমকালে নামাজ পড়ার জন্য। এরপর এই গামছায় যত চোখের পানি মুছেছি, তা সঞ্চয় করলে দীঘির সমান পানি হতো। দীঘি বোঝ? বিশাল বড় পুকুর। তো, দীঘি হয়ে যেত।’
একটি শপিং ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র বের করে সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি শুধু কোরআন শরিফ নিছি, অনুবাদটা নিছি। তায়াম্মুমের মাটি নিছি। পথে পানি খেতে হবে, তাই পানি নিছি এক বোতল।’
তার সঙ্গে নেওয়া কোরআন দেখতে চাইলে তিনি তা দেখান। এ সময় এটিকে অনেক ছেড়া দেখা যায়। অনেক পৃষ্ঠায় তালি দিয়েছেন বলে জানান আযমী। এ সময় শেষ পৃষ্ঠার সাদা অংশে তিনি কোরআনের এই অনুবাদ সম্পর্কে নিজের মতামত লিখে রেখেছেন বলে জানান। তিনি তা পড়েও শোনান। এতে লেখা রয়েছে, ‘এই অনুবাদ-তরজমায় এত ভুল রয়েছে যে কোরআনের অনুবাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ভুল ক্ষমার অযোগ্য।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
গতকাল বুধবার মধ্যরাতে পরিবারের কাছে ফেরেন আবদুল্লাহিল আমান আযমী। তার আগে, ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট দিবাগত রাতে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নেওয়া হয়। সে সময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাকে আটক করা হয়।
পরে আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে থেকে আটকের বিষয়টি একাধিকবার দাবি করা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।