বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্থগিতের বিবৃতিটি ভুয়া

অনলাইন ডেস্ক
০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:৫২
শেয়ার :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্থগিতের বিবৃতিটি ভুয়া

দেশজুড়ে আলোচনায় কোটা সংস্কার আন্দোলন। এটিকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশের নানা শ্রেণির নানা পেশার মানুষেরা যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কেউ কেউ সড়কে অবস্থান করছেন, আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট শেয়ার করে আলন্দোলনকারী ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আসছেন।

এরই মধ্যে বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা প্রতিদিন নিত্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিচ্ছেন।   

এদিকে কোনো এক মহলকে ছাত্রদের কর্মসূচির ঘোষণাকে হাতিয়ার করে মিথ্যে বিবৃতি প্রচারে ব্যস্ত হতে দেখা গেছে।

এখানে ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত ভুয়া এক দীর্ঘ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় –

‘দেশের এই অস্থিতিশীল মুহুর্তে শিক্ষার্থীদের পাশে যে সকল শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষ এসে দাড়িয়েছেন আমরা আপনাদের নিকট চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমরা দৃড় চিত্তে বিশ্বাস করি দল মত নির্বিশেষে এই আন্দোলন আমাদের সকলের।

কিন্তু আমাদের এই স্বাভাবিক আন্দোলন কে অস্বাভাবিক করে তোলার জন্য কিছু রাজনৈতিক দল উদ্ভট পরিস্থিতি তৈরি করছে, যার ফলশ্রুতিতে ঝড়ে গেলো বহু প্রান।

আমরা আগেই দাবি জানিয়েছিলাম আমাদের যে সকল সাধারণ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকটি মৃত্যুর সঠিক ভাবে তদন্ত করে যে সকল ব্যাক্তি জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে, এবং যে সকল শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আটক করা হয়েছে তাদের সকলকে নিশঃর্ত ভাবে মুক্তি দিতে হবে, এবং যে সকল প্রান ঝড়ে গিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ এর ক্ষতি হয়েছে তার দ্বায়ভার আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী'রা গ্রহন করবো না।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এই স্বাভাবিক আন্দোলনকে কেউ যেন নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে সেজন্য আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের পরবর্তী সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করলাম, সেই সাথে সরকার'কে ৭ দিনের সময় বেধে দেওয়া হলো এই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে এবং বিচার বিভাগ কে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে তার কাজ করতে দিতে হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠিন কর্মসূচি ঘোষনা করবে।’

আজ শনিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানিয়েছেন, এ রকম কোনো বিবৃতি তারা দেননি।

ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘এটা ভুয়া, এমন কোনো বিবৃতি আমরা দেইনি। এটা এডিটেড, কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে আলোচনায় না বসার সিদ্ধান্ত আমাদের সবার। এই আন্দোলন চলবে।’

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আন্দোলন প্রত্যাহারের কোনো ধরনের ঘোষণা দেইনি। এটি সরকারি প্রোপাগান্ডা। এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

তিনি আরও বলেন, আমাদের আজকে বিক্ষোভ মিছিল সারা দেশে এবং বিকেল ৩টায় শহীদ মিনারে হবে। আগামীকাল থেকে অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে এর রূপরেখা তুলে ধরা হবে এবং এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

পরিশেষে নাহিদ বলেন, এই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে এবং বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তার কাজ করতে দিতে হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’