বিদায়বেলায় যে হুঁশিয়ারি দিলেন ডিবির হারুন
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দায়িত্ব থেকে বদলি করা হয়েছে। তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিদায়ের আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের ফটকে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের যে মামলাগুলো হয়েছে সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে- অনেক নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি হারুন বলেন, আমি ডিবিতে থাকাকালীন মতিঝিলের মার্ডার থেকে শুরু করে এমপি আনারের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় বড় ঘটনা ঘটেছে। অনেক মামলা নির্ভুলভাবে তদন্ত করে সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে আমরা ক্লু বের করেছি। কোনো নিরীহ লোককে এখানে আমরা হ্যারেজ করিনি। মামলা রুজু হয়েছে কেউ যদি নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাদেরতে হ্যারেজ করা হবে না।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা এই সকল ঘটনার সাথে জড়িত, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন জায়গাগুলোতে আগুন লাগিয়েছে, যারা স্বপ্নের মেট্রোরেলে ভাঙচুর আগুন লাগিয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় বেসরকারি থানাগুলোতে আগুন লাগিয়েছে, যারা আমাদের পুলিশ সদস্যদের জ্বালিয়ে হত্যা করেছে তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এরআগে গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে মো. হারুন অর রশীদকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দায়িত্ব থেকে বদলি করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হারুন অর রশীদের জায়গায় ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহা. আশরাফুজ্জামানকে। তিনি ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে লজিস্টিক, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্টের দায়িত্বে ছিলেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ডিবি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন হারুন অর রশীদ। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি। ওই সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে ধরে নেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। এরপর বাকি তিনজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ক গত রবিবার এক ভিডিও বার্তায় কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ওই দিনই ডিবি কার্যালয়ে ওই সমন্বয়কদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়ার বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন হারুন অর রশীদ।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এসব নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পাশাপাশি হাইকোর্টও এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। গত সোমবার একটি রিট আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ ছয় সমন্বয়কের কাঁটাচামচ দিয়ে খাওয়ার প্রসঙ্গ তুললে হাইকোর্ট বলেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে ধরে নেন, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’
এ ছাড়া সম্প্রতি হারুন অর রশীদকে নিয়ে একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে তার সহকর্মীদের মধ্যে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।