‘চকলেটের প্রলোভনে’ ৩ ছাত্রীকে অপহরণ, মাদারীপুরে উদ্ধার
বরিশালে অপহৃত চতুর্থ শ্রেণির তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে অক্ষত অবস্থায় মাদারীপুর থেকে উদ্ধার হয়েছে। গতকাল রবিবার রাত ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশ।
এর আগে, ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আমানতগঞ্জের বেলতলা এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তিন শিক্ষার্থী হলো- বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণকাঠি গ্রামের টুটুল মৃধার মেয়ে নুসরাত জাহান (১১), বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে তৈয়বা আক্তার (১২) ও জেলার গৌরনদী উপজেলার হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাবিবা আক্তার (১২)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বরিশালের জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদ্রাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল হাবিবা, নুসরাত ও তৈয়বা। এ সময় অপরিচিত কয়েকজন যুবক তাদের চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ইজিবাইকে করে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। পরে ঢাকায় পাচারের উদ্দেশ্যে ওই তিন মাদ্রাসাছাত্রীকে যমুনা লাইন পরিবহনের বাসে উঠানো হয়। তখন মাদ্রাসাছাত্রী হাবিবা বুঝতে পারে তাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় পাশে থাকা এক যাত্রীর মোবাইল থেকে কৌশলে হাবিবা তার বাবাকে বিষয়টি জানায়। পরে তার বাবা হাবিবুর রহমান পুলিশের জরুরি সেবা হেল্পলাইন ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিষয়টি জানান। এর মাঝে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ডোমরাকান্দি এলাকায় যাত্রা বিরতি দেয় বাসটি। এই সুযোগে ওই তিন ছাত্রী দৌঁড়ে একটি ইজিবাইকে করে টেকেরহাট বন্দরের দিকে চলে আসে। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে ধরার চেষ্টা করে অপহরণকারীরা। এদিকে ওই তিন ছাত্রীকে উদ্ধারে নামে বরিশালের গৌরনদী, মাদারীপুরের মোস্তফাপুর ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ।
আরও জানা যায়, ইজিবাইকে চড়ে ওই তিন ছাত্রী টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ডে আসলে সেখান থেকে তাদের হাইওয়ে থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা ও বরিশাল থেকে পুলিশ আসলে ছাত্রীদেরকে হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আলম বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ তিনটি চেকপোস্ট বসায়। পরবর্তীকালে টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ছাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।’
রাজৈর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, ‘ছাত্রীদের উদ্ধারের বিষয়ে থানায় কেউ কোনো কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি শুনেছি। আর যেহেতু বরিশালের ঘটনা এবং হাইওয়ে থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, ‘অপহৃত তিন ছাত্রীকে সংশ্লিষ্ট কাউনিয়া থানা পুলিশ পাঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
