ভাত না খেয়েই ৩৫ বছর কেটে গেছে রফিকের
কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালিরা একবেলা মাছ-ভাত ছাড়া যেন চলতেই পারে না। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মাছ-ভাত থাকা চাই। তবে জন্মের পর কোনোদিন ভাত খাননি এমন এক মানুষের খোঁজ পাওয়া গেছে জামালপুরের মেলান্দহে।
মো. রফিক মিয়া নামের ওই ব্যক্তির দাবি, জন্মের পর কোনোদিন ভাতের থালা হাতে ধরেননি তিনি। এমনকি কেউ বসে ভাত খেলে তার পাশেও যান না। কেউ দাওয়াত দিলে আগেই বলে দেন ভাত খাবেন না।
রফিক মিয়ার বর্তমান বয়স ৪০ বছর। প্রায় ৩৫ বছর ধরে ভাত খান না রফিক। তার বাড়ি উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের চরপলিশা (দাদালবাড়ি) গ্রামে। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। পিতার নাম মৃত আব্দুল।
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার দালালবাড়ি মধ্যপাড়া গ্রামের রফিক মিয়া। কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজনে তার জন্য থাকে আলাদা ব্যবস্থা। ভাতের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য খাবার খেয়েই সুস্থ আছেন তিনি। জীবন যুদ্ধে ভাতের পরিবর্তে সঙ্গী করে নিয়েছেন রুটি, মাছ, মাংস, ফলমূল আর ভাজা-পোড়া।
রফিকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, চাল সেদ্ধ জাতীয় কোনো প্রকার খাবার খেতে পারেন না রফিক। এসব মুখে দিলে তার বমি আসে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ, গরুর দুধ, এসব খেয়েছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুটির পাশাপাশি ডিম, চাউল ভাজা, মুড়ি ও ফলমূল খেতে শুরু করেন। এখন বাড়িতে রান্না করা তরকারি, চাল ভাজা ও মুড়ি তার প্রধান খাদ্য।
স্থানীয় সুজন মিয়া জানান, রফিক সম্পর্কে তার চাচাত ভাই। ছোটবেলা থেকে তিনি ভাত খান না। ভাতের ঘ্রাণও সহ্য করতে পারেন না। সাদা ভাত, পোলাও, জাউ, খিচুড়ি ও খুদের ভাত কখনও খাননি। অনেক চেষ্টা করেও তাকে এগুলো খাওয়ানো সম্ভব হয়নি।
রফিকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, বিয়ের আগে এ বিষয়টি আমি শুনেছি। বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাদের বাড়িতে ভাত, পোলাও এবং বিরিয়ানি রান্না হয়। কিন্তু এসবের কিছুই তিনি খাননি। খেয়েছিলেন রুটি। তবে এ নিয়ে আমাদের সংসারে সমস্যা হয় না।
রফিক মিয়া বলেন, আমি আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে জীবনে কোনোদিন ভাত খাইনি। ভাতের গন্ধ আমি সহ্য করতে পারি না। ভাত, পোলাও, জাউ, খিচুড়ি ও খুদের ভাত দেখলে আমার বমি আসে।
চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফজলুল হক ফজল বলেন, ‘আমার জানা মতে জন্মের পর থেকেই রফিক ভাত খান না। বিভিন্ন ভাজাপোড়া খেয়ে থাকেন।’