ঋণখেলাপির মামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী কারাগারে
সোনালী ব্যাংকের প্রায় ৯ কোটি টাকা ঋণ বকেয়া থাকার অভিযোগে করা মামলায় পটুয়াখালী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বেবিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পটুয়াখালী অর্থ ঋণ আদালতে আওয়ামী লীগ নেত্রী বেবির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে বেবি জামিনে রয়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জসিম।
পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো. জিল্লুর রহমান জানান, ১৯৮৫ সালে পটুয়াখালী বিসিক এলাকায় মেসার্স পটুয়াখালী টেক্সটাইল নামে একটি কোম্পানি খুলে পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংক থেকে ২ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন সিরাজুল ইসলাম খান নামের এক ব্যক্তি। ওই কোম্পানির অর্ধেক শেয়ার নিজ নামে রেখে কোম্পানির পরিচালক পদ দিয়ে ২৫ ভাগ করে শেয়ার দেখানো হয় সিরাজুলের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বেবি এবং হামিদুল হক নামে এক ব্যক্তির নামে। টেক্সটাইলটি কিছু দিন চালু থাকার পর ১৯৯৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের বকেয়া দাঁড়ায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এ সময়ের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম এবং হামিদুল হক মারা যান। এরপর ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় ব্যাংক ম্যানেজার বাদী হয়ে পটুয়াখালী অর্থ ঋণ আদালতে জাকিয়া সুলতানা বেবিকে আসামি করে ২০০৪ সালে একটি মামলা দায়ের করেন।
ব্যাংক ম্যানেজার আরও জানান, ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সুদে-আসলে বর্তমান লেজার স্থিতি অনুযায়ী এ পর্যন্ত সুদ মওকুফের পর জাকিয়া সুলতানা বেবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার কাছে ব্যাংকের বকেয়া পাওনা দাড়ায় প্রায় ৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। চলতি বছরের গত মে মাসে জাকিয়া সুলতানা বেবি ১৯ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের কাছে সুদ মওকুফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ড সভায় তিন কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত না মেনে বেবি প্রতিনিয়ত খেলাপি তালিকার শীর্ষ ওঠেন। পরে ব্যাংকের হস্তক্ষেপে আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আসাদ জানান, আওয়ামী লীগ নেত্রী বেবিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।