রাফিতকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন বন্ধু রাজিন

আদালত প্রতিবেদক
০৮ জুলাই ২০২৪, ১৯:০৬
শেয়ার :
রাফিতকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন বন্ধু রাজিন

ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র জুবায়ের হাসান রাফিতকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিলেন তার সহপাঠী রাজিন ইকবাল চৌধুরী। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের কাছে এ জবানবন্দি দেন তিনি।  এরপর তাকে আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

গতকাল রবিবার হবিগঞ্জের মাধবপুর এলাকা থেকে রাজিনকে আটক করে র‌্যাব। পরে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) শাহ আলী থানায় সোপর্দ করলে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।  রিমান্ড ছাড়াই স্বীকারোক্তি দিতে রাজী হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম রাজিনকে আজ আদালতে হাজির করে তার স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার আবেদন করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, হত্যার শিকার জুবায়ের ঢাকা কমার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। জুবায়ের ক্লাসের ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। গত জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজিনের কাছে কলেজের শিক্ষক একটি দাবা বোর্ড পাস। পরে সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

পরে কলেজের উপদেষ্টা বরাবর নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করে দাবা বোর্ডটি ফিরে পেতে আবেদন করে রাজিন। তবে জুবায়ের ক্লাস ক্যাপ্টেন হওয়ায় আবেদনটিতে নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে রাজিনের মধ্যে বাক্‌-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে কলেজ শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মিমাংসা করা হয় এবং অভিভাবকদের অবহিত ও সতর্ক করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাজিনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জুবায়েরকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন রাজিন।

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৬ জুলাই দুপুরে আসামি জুবায়েরকে কমার্স কলেজের পার্শ্ববর্তী নিজ ভাড়া বাসায় ডাকেন রাজিন। তার ডাকে সাড়া দেন জুবায়ের। এরপর বিকেলে সেখানে পৌঁছালে তাদের মধ্যে হওয়া আগের বিরোধ নিয়ে পুনরায় বাক্‌-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জুবায়েরকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা এবং মৃত্যু নিশ্চিত করেন রাজিন।

হত্যার বিষয়টি রাজিন তার বাবাকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার আগেই রাজিনকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। শেষে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ অবগত হলে রাজিনের বাবাও কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে উভয়েই নির্দিষ্ট একটি স্থানে মিলিত হন। রাজিনের বাবা মাইক্রোবাসে করে ছেলেকে নিয়ে হবিগঞ্জে পালিয়ে গিয়ে নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে ছেলেকে রেখে নিজে অন্যত্র আত্মগোপনে চলে যান।