আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সরকার পৈশাচিক উন্মত্ততায় মেতে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:৫৬
শেয়ার :
আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সরকার পৈশাচিক উন্মত্ততায় মেতে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপিসহ সমমনা দল এবং গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন-কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই অবৈধ আওয়ামী দখলদার সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পৈশাচিক উন্মত্ততায় মেতে উঠেছে। এই ধরনের বর্বরতার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। নিষ্ঠুরতা, পৈশাচিকতা, বর্বরতা, অমানবিকতার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’

আজ বুধবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, গত কয়েক দিনে দলের কয়েক নেতা নিখোঁজ হওয়াসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয় এ বিবৃতি দেন তিনি।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নাটোর জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে।

তিনি বলেন, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর এবং কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে।

মির্জা ফখরুল করেন, আজ বাগেরহাটে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের ভিতর বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ নেতাদেরকে পুলিশ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা বিএনপি নেতা ও দুবতারা ইউনিয়ন বিএনপি নেতার ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাদেরকে গুরুতর আহত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ছাড়া গত ৩০ জুন কামরাঙ্গীরচর থানার একটি মিথ্যা মামলায় থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হকসহ মোট ছয়জন নেতাকর্মী এবং কোতোয়ালি থানার একটি মিথ্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটায় রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ আল-আমিনকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গত ৩০ জুন দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামানকে রতনপুরের তার নিজ বাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাসেলকে রাজধানীর আজিমপুর অগ্রণী স্কুলের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী অবৈধ শাসকগোষ্ঠী বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক সহিংস আক্রমণ শুরু করেছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখমসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হলো-আওয়ামী অবৈধ শাসন নিয়ে কেউ যেন প্রতিবাদ করতে সাহস না পায়।

বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন। তিনি উল্লিখিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজ নেতাদের অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর আহ্বান জানান।