খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে ভারত-আওয়ামী লীগ সম্পর্ক ছিন্ন হবে: গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:৩২
শেয়ার :
খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে ভারত-আওয়ামী লীগ সম্পর্ক ছিন্ন হবে: গয়েশ্বর

দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ছিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ বুধবার বিভিন্ন জেলায় খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে করা সমাবেশের অংশ হিসেবে যশোরে সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। 

যশোর জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরের টাউন হল ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘অনিয়ম করে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। খালেদা জিয়ার অপর নাম গণতন্ত্র। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে জনগণ মুক্তি পাবে। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে তাদের (আওয়ামী লীগ ও ভারত সরকার) স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটাও ছিন্ন হবে। তালাক দেওয়ারও সময় পাবে না। কেউ টিকিয়ে রাখতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের কাছে আমরা বৈষম্য শিকার হতাম। পাকিস্তান আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হাত দিয়েছিল। আমি মানি নাই, যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধ করে আলাদা হয়েছি, স্বাধীন করেছি, নতুন দেশ গড়েছি। কারওও গোলামি করার জন্য না।’ 

সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘উন্নয়ন তো দয়ার দান নয়; জনগণের অধিকার। জনগণের টাকায় এই উন্নয়ন হয়। উন্নয়নের কথা বলে একেকটা প্রজেক্টের নামে শেখ হাসিনার সরকার ও তার মাফিয়ারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। এই মাফিয়ার সর্দার কে? শেখ হাসিনা। এই সরকারের কাছে অর্থনীতি বলে কোনো নীতি নাই। এই সরকারের আছে শুধু দুর্নীতি। এই মাফিয়া আর দুনীর্তি সরকার ব্যবস্থা জনগণের মঙ্গল তো দূরের কথা, দেশটাও রক্ষা করতে পারবে না।’

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় নেতা সাবেরা নাজমুল মুন্নী, আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সদস্য মিজানুর রহমান খান, আব্দুস সামাদ আজাদ প্রমুখ।

বগুড়া: বগুড়ার সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা ও মিয়ানমারের অংশান সুচির নাম শুনেছি, তারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। গণতন্ত্রের জন্য তারা দুই জন যে লড়াই করেছেন, তার চেয়ে বেশি লড়াই করছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে যত নেতানেত্রী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের চেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া।’

তিনি বলেন, ‘তাকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা দিয়ে বন্দি করা হয়। তার মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে সকল পর্যায় থেকে। কিন্তু চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী। আমাদের রাজপথে নামতে হবে, কাফন পড়ে নামতে হবে।’

বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান, ভিপি সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবেদিন চান, সাবেক সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। 

কুষ্টিয়া: জেলা বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, পরিবর্তন সন্নিকটে, খুব তাড়াতাড়ি পরিবর্তন আসবে। সরকারি দলের অনেকেই গাট্টি, গুটি বেঁধে রেখেছে কখন যেন পালাতে হয়। এ সরকারের লোকজন যারা অর্থপাচার করেছে সেই অর্থ যদি সমুদ্রের অথৈ গহীনে থাকে তারপরও বিএনপি সেই অর্থ সেখান থেকে বের করে জনগণের মাঝে বিলিয়ে দেবে। 

সমাবেশের বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি প্রমুখ। 

মুন্সীগঞ্জ: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভাড়ায় খাটা ভাগনার বাহিনীর কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, শেখ হাসিনা সরকার দেশের পুলিশ বাহিনীর ভেতর বিরোধীদল নির্মূল করার জন্য ভাগনার বাহিনীর মতো কোনো প্রাইভেট বাহিনী তৈরি করেছেন কি না? যেটার প্রধান ছিলেন বেনজীর আহমেদ। তাদের কাজ ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে ধরা, গুম করা এবং খুন করা। তিনি পুলিশের পোশাক গায়ে দিয়ে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন নিয়ে প্রাইভেট চাকরি করেছেন।

এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ, আ ক ম মোজাম্মল হক, পৌরসভার সাবেক মেয়র ইরাদত হোসেন মানু, হাবিবুর রহমান চাকলাদার প্রমুখ। 

টাঙ্গাইল: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ বলেন, ‘চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

এতে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামান শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো আরও অনেকে।

এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নোয়াখালীতে ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, দিনাজপুরে ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চুয়াডাঙ্গায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, ভোলায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সিরাজগঞ্জে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, ঠাকুরগাঁওয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, লালমনিরহাটে সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, পঞ্চগড়ে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া নরসিংদী, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, বরগুনা, বান্দরবান ও চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে বিএনপি।