তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে ৬ ইউনিয়ন

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:২৮
শেয়ার :
তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে ৬ ইউনিয়ন

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে নদী তীরবর্তী ৬ ইউনিয়নের বিশাল এলাকা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২ হাজার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, গত ৭ দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এতে করে হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, তারাপুর, শ্রীপুর ও কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার মানুষ। পানিবন্দি মানুষ গবাদীপশু, হাঁস-মুরগি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন। বিশুদ্ধ পানি ও জলের তীব্র সংকটসহ রান্না করার মত শুকনো উঁচু জায়গা না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করছেন। গবাদী পশু পাখিদের ঠাঁই দেওয়ার মতো উঁচু জায়গা না থাকায় ও গো-চারণ ভূমি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া আমন বিজতলা ও বাড়ন্ত তোষা পাট ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখিন হতে যাচ্ছে চাষিরা।

হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি ১২ সহস্রাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া তাদের বড় সম্পদ গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। তাদের খাদ্য চাহিদা মেটানোর মতো ত্রাণ সামগ্রী এখনো পাওয়া যায়নি। জরুরি ভিত্তিতে পানিবন্দি এ সকল মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দের দাবি করছি।

কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নের এক তৃতীয়াংশই পানির নিচে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৬ সহস্রাধিক মানুষ। নৌকা ও ভেলা ব্যবহার ছাড়া তারা ঘর থেকে বেড় হতে পারছেন না। পানিবন্দি মানুষজনের দুর্ভোগ দেখারমতো নয়। জরুরিভাবে তাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, এ পর্যন্ত দুর্গতদের মাঝে কিছু শুকনো খাবার ও নগদ ৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যানদের তথ্যের ভিত্তিতে পর্যাপ্ত ত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন দুর্গত মানুষের খোঁজ-খবর রাখছি। আশা করছি, যতদ্রুত সম্ভব তাদের মাঝে চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা সম্ভব হবে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি দুর্গত কোনো মানুষই না খেয়ে মরবে না ইনশাআল্লাহ।’