ধর্মগুরুর অনুষ্ঠানে ১১৬ জনের মৃত্যু, কে এই ভোলে বাবা
ভারতের উত্তর প্রদেশের ভোলে বাবা নামে এক ধর্মগুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে এসে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভক্তরা হাথরাসে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আসলে সেখানেই এই মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
যে জায়গায় ভোলে বাবা নামে ওই ধর্মগুরুর ভাষণ শোনার জন্য অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল, সেটি ইটাহ ও হাথরাস জেলা দুটির সীমান্তে।
হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, তীব্র গরমের মধ্যে চলছিল সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। তখন তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই পদপিষ্টের ঘটনা।
এত মানুষের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিং জানান। হাথরাস জেলার মুঘলগড়ি গ্রামে ভোলে বাবার অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এদিকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদেন এনডিটিভি জানিয়েছে, মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হতে পারেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু বাবা নারায়ণ হরি ওরফে ‘ভোলে বাবা’।
কে এই ভোলে বাবা?
ভোলে বাবা একজন ধর্মপ্রচারক। তিনি উত্তর প্রদেশের হাথরাসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। আলোচিত এ ভোলে বাবা আগে রাজ্য পুলিশে চাকরি করতেন। পুলিশে তিনি প্রায় ১৮ বছর চাকরি করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, উত্তর প্রদেশ পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটে কাজ করতেন ভোলে বাবা। চাকরি ছাড়ার পর তিনি লোকজনকে উপদেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জন্য সৎসঙ্গ আয়োজন শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। নিজেকে নারায়ণ সরকার হরি বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন তিনি। তার ভক্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
এই ভোলে বাবা পাতিয়ালির বিশ্ব হরি বাবা নামে বেশি পরিচিত। জনসমক্ষে তিনি আসেন সাদা কাপড়ে। উপদেশ অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে থাকেন স্ত্রী। বাবার ভক্তদের বেশিরভাগই আসেন আগ্রা ও আলিগড় জেলা থেকে। তার ভক্তদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের।
বাবা কোনো গুরুর অনুসারী নন বলে বিশ্বাস করা হয়। তার দাবি, যেসব উপদেশ তিনি দেন, সেগুলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা।
ফেসবুকে বাবার অনুসারীর সংখ্যা তিন লাখের বেশি। তার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে অনেক সংসদ সদস্য ও বিধানসভার সদস্য যোগ দেন বলে মনে করা হয়। এ অনুষ্ঠান মঙ্গলবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এত জনপ্রিয়তার পরও গণমাধ্যম থেকে দূরে রাখা হয় বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। বাবার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যও সামনে আসে না ভোলে বাবার লোকেরা গোলাপি রঙের শার্ট প্যান্ট এবং সাদা ক্যাপ পরেন। অনুষ্ঠানে ট্রাফিক সামলানো এবং আয়োজনের বিষয় তারা দেখভাল করেন।