‘হিন্দু সেজে’ পাহাড়ের মন্দিরে ছিলেন আনার হত্যার ২ আসামি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে করা মামলায় গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী সাজী হিন্দু সেজে ২৩ দিন সীতাকুণ্ডের পাতাল কালী মন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন। তারা পলাশ রায় ও শিমুল রায় নামধারণ করে সেখানে লুকিয়ে ছিলেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ। আসামিদের নিয়ে রাজধানীর পূর্বাচলের ১৮ নম্বর সেক্টরে বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ারে অবতরণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে থেকে ফয়সাল, মোস্তাফিজ, জিহাদ কিলিং মিশনে অংশ নেন। মূল ঘাতক ছিলেন শিমুল ভূঁইয়া। বিভিন্ন জায়গায় পলাতক দুই আসামির অবস্থানের তথ্য পাচ্ছিলাম। অবশেষে মঙ্গলবার জানতে পারি তারা খাগড়াছড়ির গহীন পাহাড়ে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফয়সাল ও মোস্তাফিজ নাম পরিবর্তন করে পলাশ দাস ও শিমুল রায় নাম ধারণ করে ছদ্মবেশে সীতাকুণ্ডের পাতাল কালীমন্দীরে ২৩ দিন ছিলেন। আনার হত্যার পর এই দুই আসামি ১৯ মে বাংলাদেশে আসে। ২০ মে তাদের দুজনকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তারা বিভিন্নভাবে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
হারুন অর রশীদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আখতারুজ্জামান শাহীনকে গ্রেপ্তার করাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেলিজেন্সকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে, তারাও তাকে ধরার চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানা।
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার ও তদন্তে ডিবির কোনো চাপ আছে কি না, জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, ‘না এখন পর্যন্ত কোনো চাপ নেই। যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে শুধু তাদের আইনের আওতায় আনছি। কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হবে না। আবার কোনো দোষী ব্যক্তিকে কেউ চাপ দিয়ে ছাড়াতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
দুই আসামিকে নিয়ে ঢাকায় ফেরার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ
এর আগে দুপুরে খাগড়াছড়ির গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে আনার হত্যার দুই আসামি ফয়সাল ও মুস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপি ডিবি। অভিযানে নেতৃত্ব দেন হারুন অর রশীদ।
উল্লেখ্য, এমপি আনার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশে এর আগে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভুঁইয়া, শিলাস্তি রহমান, সাইদুল করিম মিন্টু ও কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু। এদের মধ্যে শিমুল, তানভীর ও শিলাস্তি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর মিন্টু ও বাবু নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করেছেন বলেও দাবি পুলিশের।
অন্যদিকে, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জিহাদ হোসেন ওরফে কসাই জিহাদকে। নেপালে আটক হন সিয়াম হোসেন নামের আরও একজন। পরে তাকে নেপাল থেকে ফিরিয়ে এনে গ্রেপ্তার দেখায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
