গঙ্গা-তিস্তা চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের আপত্তি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের আপত্তির বিষয়টি দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকরা জানতে চান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিমতের কথা বলেছেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কারণে বাংলাদেশ এর আগেও তিস্তার পানি পায়নি। এবারও তারা বাধা হয়ে সামনে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো আশা দেখেন কি না?
জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার) এবং কেন্দ্রের (ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার) বিষয় তাদের (ভারতের) আভ্যন্তরীণ। আমাদের সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করে বা চুক্তি করে, ঐকমত্য হয়, দ্বিমত হয়। সেটা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। আমি মনে করি, এ প্রশ্নটা ভারত সরকারকে করলে ভালো হয়। তারাই এটার সঠিক উত্তর দিতে পারবে। কারণ, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
গঙ্গা চুক্তি নবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চুক্তি না হলেও এটি অটোমেটিক চলবে। চুক্তিতে সেভাবে বলা আছে, আগে চুক্তিটি সেভাবে করা আছে। তবে আমরা নবায়ন নিয়ে আলোচনা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক নয়াদিল্লি সফরের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত একটি কারিগরি দল বাংলাদেশে যাবে। কবে নাগাদ দলটি বাংলাদেশে আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল কমিটি আসতে তো একটু সময় লাগবে। মাত্র আমরা ঘুরে এলাম। টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করতে হবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ তো আছে। ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ। তারপর উত্তরবঙ্গ-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ। ১৯৬৫ সালের আগে অনেক বেশি রেল যোগাযোগ ছিল এবং ৬৫ সালে যুদ্ধের পর এ রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে চালু করার কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘শুধু ভারতের সঙ্গে হচ্ছে তা নয়, আমরা নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও রেলে এবং গাড়িতে করে যেতে পারি সে নিয়েও আলোচনা করছি। আমরা আঞ্চলিকভাবে যেন যোগাযোগ বাড়াতে পারি, সে নিয়ে আলোচনা করছি।’
বিএনপি নেতারা চুক্তি আর এমওইউর মধ্যে কোনো পার্থক্য বোঝেন না দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা চুক্তি আর সমঝোতার বিষয়টি বোঝে না তাদের বিষয়ে কি জবাব দেব, সেটি আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি, সমঝোতা হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সঠিকভাবে রাখতে পারেনি। বিএনপি কারণে-অকারণে সরকারের বিরোধিতা করে। যে সমঝোতা স্মারকগুলো হয়েছে, সেগুলোর সবগুলো বাংলাদেশের স্বার্থে হয়েছে।’