রাসেলস ভাইপার ভেবে পিটিয়ে মারা হলো গুইসাপ
হঠাৎ ঘরে ঢোকে একটি সাপ। রাসেলস ভাইপার ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। ভয়ে ঘর থেকে বের হয়ে ডাকা হয় প্রতিবেশীদের। পরে একঘণ্টা চেষ্টার পর তারা ঘরের ফ্রিজের নিচ থেকে মেরে উদ্ধার করেন বিরল প্রজাতির বড় একটি গুইসাপ।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ গ্রামের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুনীল কুমার দে’র বসতঘর থেকে গুইসাপটি মারা হয়।
সুনীল কুমার দে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমার বসতঘরে একটি সাপ ঢুকতে দেখতে পাই। দূর থেকে দেখে আমি মনেকরি সাপটি রাসেলস ভাইপার। আতঙ্কিত হয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফোন করে গ্রাম পুলিশ পাঠাতে অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি গ্রাম পুলিশ পাঠাতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে প্রতিবেশীদের ডেকে আনি। রাসেলস ভাইপারের খবর শুনে গ্রামের উৎসুক জনতাও ভিড় করেন। তবে ভয়ে কেউ ঘরে ঢোকার সাহস পাচ্ছিলেন না। পরে লাঠিসোঁটা নিয়ে কয়েকজন যুবক ঘরে ঢুকে এক ঘণ্টা চেষ্টার পর ফ্রিজের নিচ থেকে সাপটি মেরে বাইরে বের করে আনেন। তবে বাইরে আনার পর দেখা যায় এটি একটি গুইসাপ।’
সুনীল কুমার দে বলেন, ‘চারদিকে বর্তমানে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব দেখা দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে আতঙ্কিত হয়ে সাপটি মারা হয়েছে। এটি গুইসাপ তা আগে থেকে বুঝতে পারলে সাপটি আমি মারতে দিতাম না।’
রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. খায়ের উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘গুইসাপ পরিবেশবান্ধব ও মানুষের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রাণী। ময়লা নোংরা, বিষাক্ত পোকা মাকড়, ইঁদুর ও বিষাক্ত সাপ খেয়ে এরা বেঁচে থাকে। এতে মানুষ অনেকটা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। গুইসাপ মিঠা এবং লবণ পানিতে বসবাসের উপযোগী একটি উপকূলীয় প্রাণী। তবে এটি বর্তমানে অনেকটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কারণ না বুঝে মানুষ এটিকে নির্বিচারে হত্যা করে ফেলে। একে আমাদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার।’
শুধু গুইসাপই নয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উপকারী সব প্রাণীকেই বাঁচিয়ে রাখা দরকার বলে মনে করেন ডা. খায়ের উদ্দীন আহমেদ।