সম্পর্কের মাধ্যমে আমাকে কখনো সিনেমায় গান গাইতে হয়নি
কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা। শাকিব খানের ‘তুফান’ সিনেমার ‘দুষ্টু কোকিল’ গানটি গেয়ে জনপ্রিয়তার আকাশে উড়ছেন। গান প্রকাশের আগেই ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। এ গান ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- তারেক আনন্দ
দীর্ঘদিন পর শাকিব খানের সিনেমায় প্লেব্যাক করলেন। আপনি প্লেব্যাকে এই সময়ের সেরা শিল্পী হয়েও শীর্ষ নায়কের সিনেমায় গানের জন্য এই লম্বা বিরতিটা কেন?
সর্বশেষ ‘বসগিরি’তে আমার গান ছিল। আমি তো নিয়মিতই সিনেমায় গাইছি। সিনেমার ক্ষেত্রে যেটা হয়, যখন যাকে প্রয়োজন তাকেই নেওয়া হয়। আমার কাছে মনে হচ্ছেÑ এত দিন ওনার সিনেমায় সুযোগ আসেনি, এই তো এবার হলো।
তুফান সিনেমার ‘দুষ্টু কোকিলের’ সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
ভীষণ। সিনেমা মুক্তির পরপরই চারদিক ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেলারে কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও দেখেই ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকাশ হয় গান। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৪০ লাখের বেশি ভিউ হয়েছে গানের। গান প্রকাশের পর থেকেই কাছের মানুষ থেকে শুরু করে আমার দর্শক, শ্রোতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। গানটির কথা, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন আকাশ সেন।
আকাশ সেনের সঙ্গে আপনার বেশ ভালো রসায়ন। অনেক গান তার সুরে গেয়েছেন। এই গানটির সুযোগ কীভাবে এলো?
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
রেশমী চুড়ি, ও ডিজে, হেইলা দ্ইুলা নাচ, বৈশাখের বিকেল বেলাসহ আরও বেশ কিছু গান আকাশ সেনের সুরে গেয়েছি। কিছু গান আমাদের দ্বৈতকণ্ঠেও আছে। ওনার সঙ্গে আমার গানের রসায়ন চমৎকার। সেই ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছি। তুফান টিম আকাশ সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের সমন্বয়েই আমাকে দিয়ে এ গান গাওয়ানো হয়েছে।
ভয়েস দেওয়ার পর কি মনে হলো গানটি নিয়ে?
ভয়েস দেওয়ার পর মনে হলো হুক লাইনটা খুবই ক্যাচি। মানুষ দ্রুত পছন্দ করবে। সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর আমি জানতে পারলাম মিমি চক্রবর্তী ঠোঁট মিলিয়েছেন। কিছু দিন পর জানলাম শাকিব খানও আছে এই গানের দৃশ্যে। সব জানার পর আমার প্রত্যাশা অনেক বেড়ে যায়। আশাবাদী ছিলাম গানটা জনপ্রিয় হবে।
‘তুফান’ সিনেমায় আপনার গান যাচ্ছে। এ গানের বিষয়ে আপনার সঙ্গে শাকিব খানের কোনো কথা হয়নি?
আমার সঙ্গে শাকিব খানের পার্সোনাল কোনো যোগাযোগ নেই। কয়েকটি প্রোগ্রামে দেখা হয়েছে, এ পর্যন্তই। পার্সোনালি কখনো দেখা বা কথা হয়নি। শাকিব খানের লিপে আমার ‘দিল দিল দিল’ হিট গান। ‘রসিক আমার’ এটাও হিট। শাকিব খানের সঙ্গে সরাসরি কথা না হলেও ওনার লিপে অনেক আগেই হিট গান আছে। সে গানগুলি নিয়মিত স্টেজে পারফর্ম করি।
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা
পার্সোনাল পরিচয় নেই, এজন্যই কি শাকিবের সিনেমায় কনার গাওয়ার সুযোগ কম?
ঠিক জানি না ব্যাপারটা। আমি যখন ‘দিল দিল’ গাইলাম তখন কিন্তু শওকত আলী ইমন ভাইয়ের ডাকেই সুযোগ পেয়েছি। আমি প্লেব্যাক করে আসছি ২০০২ সাল থেকে। বেশিরভাগ সময় মিউজিক ডিরেক্টরের কাছ থেকেই গানের জন্য ডাক এসেছে। এ ব্যাপারে কখনো সম্পর্কের মাধ্যমে সিনেমায় কখনও গান গাইতে হয় নাই। এটা আমার প্র্যাকটিসে নেই।
চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ারে কনার অসংখ্য জনপ্রিয় গান। মাঝে সিনেমায় আপনার গানের সংখ্যা কমে যায়, এর কারণ কি বলে মনে করেন?
দিল দিল দিল, ওহে শ্যাম, তুই কি আমার হবিরে- এগুলো কাছাকাছি সময়ের গান। সবটিরই মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। এ কারণে হয়তো আমার কাছে দর্শকের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। সুড়ঙ্গ, প্রহেলিকাতেও তো আমার গান আছে। ‘কলিজা আর জান’, ‘ওমরের’ ভাইরাল বেবি- নিয়মিতই তো গাইছি। হয়তো শ্রোতা দর্শকের চাহিদা আমার কাছে আরও অনেক বেশি।
প্রায়ই শোনা যায়, আপনাকে সিনেমার গান থেকে দূরে রাখার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটা নিয়ে কি বলবেন?
এই কথাগুলো গত দুই বছর থেকে শুনে আসছি বিভিন্ন জায়গায়। আমি অনেক আগে থেকেই গান শুরু করেছি। প্রথম প্লেব্যাক করি ২০০০ সালে; দুই যুগের ক্যারিয়ার। গানের জায়গা হলো পবিত্র জায়গা। আমার কাছে মনে হয়, ঐশ^রিক জায়গা থেকে গান আসে। এখানে যেসব রাজনীতি, ষড়যন্ত্র, আমি যদি কোনো ওয়ার্ডও ইন্টারভিউয়ে ইউজ করি, তাহলে আমার গানের ক্ষতি হবে। আমি শুধু গানটাই গেয়ে যেতে চাই। আজকে যে গানটা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, এটা ন্যাচারালই হয়েছে। আমাকে লবিং করতে হয়নি। যা কিছু আমার জন্য বরাদ্দ তা আসবেই। সিব কিছু নির্ধারণ হয় ওপর থেকে।
শিগগির নতুন আর কোন গানে পাওয়া যাবে আপনাকে?
বেশকিছু সিনেমার কাজ হয়েছে। শিগগির নতুন সিনেমার গানের সুখবর দিতে পারব শ্রোতাদের। এছাড়া আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে আমার মিউজিক ভিডিও প্রকাশ হবে।