তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামের প্রধান দুই নদী তিস্তা ও দুধকুমার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রতিনিয়ত বেড়ে বিপৎসীমার খুব কাছে রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে কুড়িগ্রামে একটি স্বল্প মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় পাউবোর দেওয়া তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দুধকুমার নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি রয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে দুধকুমার ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার রাজারহাট ও নাগেশ্বরী উপজেলার ১২টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়াতে সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে এবং চিলমারীর কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, উজানে ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার ভিতরে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং ২৫১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।