জি থ্রি রাইফেলসহ আরসা কমান্ডার গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মো. জাকারিয়া নামের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) এক কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫। পরে তার দেওয়া তথ্যে জি থ্রি রাইফেল ও ৫ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার জাকারিয়া উখিয়ার বালুখালীর ১০ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে র্যাব-১৫-এর কক্সবাজার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন। এর আগে আজ ভোরে ১০ নম্বর ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, উদ্ধার হওয়া জি থ্রি রাইফেল মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত এবং মিয়ানমার থেকে অস্ত্রটি বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব গোয়েন্দা তথ্য ছিল ১০ নম্বর ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার কতিপয় সদস্য নাশকতার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে হতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র নিয়ে এসেছে।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার জাকারিয়া স্বীকার করেছেন তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো। মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র পালংখালী ইউনিয়নের ঘাটি বিলে লুকিয়ে রেখেছে। ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের (মিয়ানমার) আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ১টি জি থ্রি রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র উল্লেখ করে লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, জাকারিয়া ২০১৭ সালে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে এসে ১০ নম্বর ক্যাম্পে স্বপরিবারে বসবাস শুরু করেন। মিয়ানমারে অবস্থানকালে আরসার শীর্ষ কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে এবং আরসায় যোগদান করেন। বাংলাদেশে প্রবেশের প্রথম দিকে তিনি আরসার নেট দল (সংবাদদাতা) এবং পরবর্তীতে গান গ্রুপের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে তিনি ১০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক-এফ/১৭ এর ব্লক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান। এ সময় তার নেতৃত্বে আরসার অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্য পরিচালনা হতো।
২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করলে তিনি মিয়ানমারের পালিয়ে যান। কিছুদিন পর আবারও বাংলাদেশে এসে আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন কিলিং মিশন ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন। তিনি অস্ত্র চালনায় দক্ষ হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংগঠিত বিভিন্ন নাশকতা, মারামারি, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি, অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো। জাকারিয়ার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি দুইবার কারাভোগও করেছেন।
র্যাব অধিনায়ক জানান, জাকারিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।