হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলেও ইসরায়েল মানবে কি?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১২ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮
শেয়ার :
হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলেও ইসরায়েল মানবে কি?

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছে গাজার শাসক দল হামাস। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিস্তারিত নিয়ে আলোচনার জন্য তারা প্রস্তুত। 

হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে চলে কিনা তা অনেকটাই ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভর করে।’

সামি আবু জুহরি বলেন, ‘হামাস যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলের হাতে জিম্মিদের অদলবদলের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব বাস্তবায়নে অবিলম্বে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দখলদারদের (ইসরায়েল) বাধ্য করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মার্কিন প্রশাসন একটি বাস্তব পরীক্ষার সম্মুখীন হবে।’

এদিকে ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন তেল আবিবে বলেছেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা মঙ্গলবার বিকেল এবং আগামী কয়েক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই পরিকল্পনাগুলো থাকা অপরিহার্য।’

সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের দেওয়া গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। তবে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

গাজার বাইরে থাকা হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি জানিয়েছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে ইসরাইল এটি মেনে চলবে কিনা তা যুক্তরাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক মধ্যপ্রাচ্য দূত ডেনিস রস বিবিসি রেডিও ফোরকে বলেছেন, যেকোনও যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মট্রিচ ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগভির উভয়ে বলেছেন, ইসরায়েল যদি প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নেয় তাহলে তারা সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন।

ডেনিস রস বলেছেন, হামাস যা বলছে তা সঠিক হলে চুক্তির শর্তগুলো নেতানিয়াহুর প্রস্তাবের কাছাকাছি। ফলে এটি প্রত্যাখ্যান করা তার জন্য সহজ হবে না। আর নেতানিয়াহু যদি প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে সরকারের আরও মন্ত্রীরা তাকে ছেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে।

তিনি বলেছেন, ‘এতে হয়তো সরকারের পতন হবে না, কিন্তু অনেক ঘটনার সূত্রপাত ঘটবে। আমি মনে করি এতে সরকার ঝুঁকিতে পড়বে। একপর্যায়ে নেতানিয়াহুকে বেনগভিরের বদলে বাইডেনকে বেছে নিতে হবে, স্মট্রিচের বদলে জিম্মিদের বেছে নিতে হবে।’

এদিকে, গাজা শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই শিশু। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ১৬৪ জন নিহত এবং ৮৪ হাজার ৮৩২ জন আহত হয়েছে।

বিপরীতে হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,১৩৯ জন। সেইসঙ্গে এখনও কয়েক ডজন লোক গাজায় বন্দি রয়েছে।