নারীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী
নারীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আইসিভিজিডি প্রকল্পের ৯৬ হাজার ৯২৮ জন নারী উপকারভোগীদেরকে জিটুপি (গভর্নমেন্ট টু পারসন) পদ্ধতির মাধ্যমে ৯৬ হাজার ৯২৮ জন উপকারভোগীকে তাদের আয়বর্ধক কার্যক্রম ব্যবসা পরিচালনা করতে এককালীন ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ অনুদান বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এই যুগান্তকারী উদ্যোগটি নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড বাড়াতে এবং ব্যবসা শুরু করতে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, এই উপকারভোগীরা প্রত্যেকে জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং উন্নত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করেছে। এখন তাদের নিজস্ব উদ্যোগ ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত। এই ব্যবসা অনুদান অসচ্ছল নারীদের উন্নতি সাধনের জন্য প্রদান করা হয়েছে। যাতে তারা প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যবহার করে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন এবং পরিবার ও সমাজে অবদান রাখতে পারে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের চলমান প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই বিনিয়োগ অনুদান প্রদানের মাধ্যমে আমরা কেবল নারীদের স্বতন্ত্রভাবেই সমর্থন করছি না, বরং আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করছি। নারীদের উন্নতি করতে এবং দেশের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে বর্তমান সরকার এমন সুযোগ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কাল্পেল্লি বলেন, ‘এই রূপান্তরমূলক উদ্যোগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে পেরে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সম্মানিত। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে টেকসই উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে এবং এই বিনিয়োগ অনুদান নারীকে স্থিতিস্থাপক জীবিকা গড়ে তুলতে সক্ষম করবে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য নিবেদিত, ফলে সবার জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কালপেল্লি ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খানের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ২ জন উপকারভোগী এবং অন্যান্য অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপকারভোগীদের জীবনে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয় এবং টেকসই উন্নয়ন ও লিঙ্গ সমতার প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নারীর অবদানের অভাব পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএসএস) ২০১৫-এর আওতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যার আওতায় ১ লাখ ৪০ হাজার অসচ্ছল নারীকে পুষ্টি চাল বিতরণ ও ৯টি মৌলিক বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় একটি অন্যতম উপাদান হলো ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (আইসিভিজিডি) প্রকল্প। যার মাধ্যমে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগীর মধ্য থেকে প্রথম ধাপে ২০১৫-২০১৮ মেয়াদে বাংলাদেশের আটটি উপজেলায় ৮ হাজার নারী এবং বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপে (১ম সংশোধিত) ৬৪টি জেলা থেকে একটি করে উপজেলা নিয়ে মোট এক লাখ নারীকে উপকারভোগী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। উপকারভোগীদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে নগদ অর্থ অনুদান, চাল বিতরণ, ৫টি নির্ধারিত বিষয়ের অধীনে ৫টি মডিউলে প্রশিক্ষণ এবং ১টি মডিউলের অধীনে প্রত্যেকের পছন্দ ও সুবিধাজনক একটি বিষয়ে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ ও ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।