বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে: অর্থমন্ত্রী
চলতি বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আজ শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি কমার জন্য ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। এ বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে বাজেটের আকার আমরা কমিয়ে রেখেছি। যাতে মূল্যস্ফীতির ওপর কোনো চাপ না পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি এখনও ৯ শতাংশের ঘরে রয়েছে। পৃথিবীর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়েছে। যার চাপ ডলারে পড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অবমূল্যায়ন মূল্যস্ফীতির বড় কারণ। আগামী বছরে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। মূল্যস্ফীতি যেহেতু চ্যালেঞ্জ, যে কারণে সংকোচনমূলক নীতি অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রস্তাবিত এ বাজেটের আকার ধরা হয় ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। যদিও গত ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করেছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের এ আকার কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।