বলিউডের পর্দায় রাজনীতিবিদরা
নেতাজি সুভাষ বোস : দ্য ফরগোটেন হিরো
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার স্যাম বেনেগালের ‘নেতাজি সুভাষ বোস : দ্য ফরগোটেন হিরো’ সিনেমাটি এক অকুতোভয় সংগ্রামী রাজনীতিবিদ, চিরস্মরণীয় নেতা, বাঙালির অহংকার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসকে নিয়ে নির্মিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুভাষ ভারত-মুক্তির আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সিনেমায় এই ক্যারিশম্যাটিক নেতার ভূমিকায় অভিনয় করেন শচীন খেদেকর। সিনেমায় দেখা যায়- নেতাজির নেতৃত্বের গুণাবলিতে মুগ্ধ হয়ে তার অনুগামীরা গহিন জঙ্গল, দুর্গম গিরি পাড়ি দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। মোদ্দাকথা সিনেমায় নেতাজির জীবনের প্রায় ঘটনাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুনিপুণভাবে।
ঠাকড়ে
ভারতের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে- বালাসাহেব ঠাকড়ে। তিনি রাজনৈতিক মহলে ‘বাল ঠাকড়ে’ হিসেবে সমধিক পরিচিত। ১৯৬৬ সালে মহারাষ্ট্রে ডানপন্থি মারাঠি ও কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল শিবসেনা গঠন করে তিনি পুরো উপমহাদেশে আলোচিত হয়ে ওঠেন। বাল ঠাকরের হাত ধরে উত্থান হওয়া সেই দলটি এখনো রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। একটি সাপ্তাহিকে কার্টুনিস্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা বাল ঠাকরেকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা অভিজিৎ পানসে ‘ঠাকড়ে’ সিনেমাটি নির্মাণ করেন। ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমায় নাম ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেন নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী। তার স্ত্রীর ভূমিকায় অমৃতা রাও ছিলেন দুর্দান্ত।
পিএম নরেন্দ্র মোদি
একজন দরিদ্র চা-বিক্রেতা হিসেবে শুরু করেন জীবনের সংগ্রাম। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। মেধা আর একাগ্রতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন অলঙ্কৃত করেন। আর নিজেকে পরিণত করেন ভারতের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে। তবে সিনেমাটি ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে আঞ্চলিক রাজনীতি থেকে যেভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন সেই পটভূমিতে নির্মিত। যশেদাবেনের সঙ্গে বিয়ে অস্বীকার, সন্ন্যাসী হতে বাড়ি থেকে পালানো, ফিরে এসে গুজরাট রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ধীরে ধীরে দেশের সর্বোচ্চ পদে আসীন। ওমাং কুমারের পরিচালনায় ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’তে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন বিবেক ওবেরয়। চা-বিক্রেতা দিয়ে শুরু আর প্রধানমন্ত্রীর শপথে সমাপ্তি- এক সংগ্রামী ও সাফল্যের গল্প অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে সিনেমাটিতে।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
অ্যান ইনসিগনিফিকেন্ট ম্যান
এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে আলোচিত রাজনীতিবিদ হলেন রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ২০১৩ সালে পুরো ভারতকে বিস্ময়ে হতবাক করে দিয়ে একজন আয়কর যুগ্ম কমিশনার থেকে দিল্লির মসনদে বসেন কেজরিওয়াল। আম-আদমি পার্টি প্রতিষ্ঠা করে এবং অসাধারণ নেতৃত্বগুণে সাড়া ফেলে দেন দেশ-বিদেশে। ‘অ্যান ইনসিগনিফিকেন্ট ম্যান’ মূলত আর্থ-রাজনৈতিক তথ্যচিত্র। এটিকে পুরোপুরি সিনেমা বলা যায় না; কিন্তু নির্মাতা খুশবু রাঙ্কা ও বিনয় শুক্লা অত্যন্ত সুচারুভাবে এই তথ্যচিত্রটি সিনেমার আদলে ফুটিয়ে তুলেছেন। এটি কানাডার ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্ট্যান্ডিং ওভেশন অর্জন করে।
সর্দার
উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে কজন রাজনীতিক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেন, তাদের মধ্যে অন্যতম সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। আর এই ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে কেতন মেহরা ১৯৯৪ সালে ‘সর্দার’ সিনেমাটি বানান। যে সিনেমা শুধু ভারতই নয়, উপমহাদেশের বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনেক কিছু শিক্ষণীয় হয়ে ওঠে। নতুন প্রজন্ম জানতে পারে ব্রিটিশ শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির বিভিন্ন পাচালি। ‘সর্দার’ সিনেমায় বল্লভভাইয়ের চরিত্রে পরেশ রাওয়ালের অনবদ্য অভিনয় প্রশংসা কাড়ে। এই সিনেমার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো- এটি এই যুগের সমাজে মাহাত্মা গান্ধীর স্বাধীনতার সংগ্রামকে কিছুটা উপহাস করে।
থালাইভি নেত্রী
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
জয়ললিতা জয়রাম। তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির ময়দানে ‘পুরাচ্চি থালাইভা’ নামে পরিচিত। যার বাংলা ‘বিপ্লবী নেতা’। ভারতজুড়ে সম্মানের সঙ্গে সবাই ডাকতেন ‘আম্মা’ বলে। তার জীবনী নিয়ে ২০২১ সালে নির্মিত ‘থালাইভি নেত্রী’। কঙ্গনা রানাউত অভিনীত সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলে। কঙ্গনা দুর্দান্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জয়ললিতার জীবন কাহিনি। এতে রাজনীতিবিদ এমজি রামচন্দ্রনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অরবিন্দ স্বামী। সিনেমায় ভাগ্যশ্রী, বিজয় দেবড়াকু-, মাধুও সাবলীল অভিনয় করেছেন। তামিল, হিন্দি ও তেলেগু ভাষায় মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এএল বিজয়। তামিলনাড়ুর অধিপতি হিসেবে ১৪ বছরে ছয়বার দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের এই প্রেরণাদায়ী রাজনৈতিক রোল মডেল কিন্তু ৬০-এর দশকে শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী ছিলেন।
গান্ধী, মাই ফাদার
চলচ্চিত্র নির্মাতা ফিরোজ আব্বাস খান মহান নেতা মহাত্মা গান্ধীর জীবনীর ওপর একটু ব্যতিক্রমী সিনেমা ‘গান্ধী, মাই ফাদার’ নির্মাণ করেন ২০০৭ সালে। এতে মূল চরিত্র কিন্তু মহাত্মা গান্ধী নন, সব ফোকাস এসে পড়ে তার বড় ছেলে হরিলাল গান্ধীর ওপর। ছেলের সঙ্গে মহাত্মার উত্তাল সম্পর্কের চিত্রণ ফুটে ওঠে সিনেমায়। হরিলালের চরিত্রে অভিনয় করেন অক্ষয় খান্না। হরিলাল চেয়েছিলেন বাবার মতো বিদেশে গিয়ে অ্যাটর্নি হতে; কিন্তু বাবা মহাত্মা চেয়েছিলেন, ছেলে তার সঙ্গে থেকে দেশের অসমাপ্ত কাজে সহায়তা করুক। বাবার ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে হরিলাল স্ত্রী-সন্তানের কাছে যান; কিন্তু জীবনযুদ্ধে হেরে দারিদ্র্যের মুখোমুখি হন। বেসামাল জীবনযাপন করে শেষ পর্যন্ত মারা যান।
ম্যায় অটল হুঁ
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ির প্রায় সাড়ে সাত দশকের কর্মজীবনকে ‘ম্যায় অটল হুঁ’ ছবিতে বাঁধতে চেয়েছেন প্রযোজক বিনোদ ভানুশালী ও পরিচালক রবি।
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা