সিলেটে দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না
সিলেটের সাত উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার পানি পাঁচ দিন পর নামতে শুরু করেছে। তবে তাতে ভোগান্তি কমেনি বিন্দুমাত্র। পাহাড়ি ঢল ও পাঁচদিন স্থায়ী বন্যায় গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক বিধস্ত হয়েছে। অনেক সড়কের ভাঙা অংশে নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। যাতায়াত দুরাবস্থার কারণে বন্যার পানি নেমে গেলেও অনেকে আছেন খাবার সংকটে। ত্রাণ বরাদ্দ থাকলেও তা সবার কাছে পৌঁচ্ছাছে না।
শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল সিলেটে বৃষ্টি ও বন্যার মধ্যে মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে ফের ভূমিকম্প হয়েছে। আজ রবিবার দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটে হওয়া এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৮। তবে সিলেটে এতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট আবহওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন।
এর আগে, গত ২৯ মে সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটেও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে সিলেট। ওই ভূ-কম্পনেরও উৎপত্তিস্থল ছিলো মিয়ানমার এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিলো ৫.৫।
এলজিইডির গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রায় ৮৮ কিলোমিটার এলজিইডির পাকা সড়ক এবং প্রায় ১৯৮ কিলোমিটার কাঁচা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যা টাকার অংকে প্রায় ১০৩ কোটি টাকা। বন্যার পানি সম্পূর্ণ কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পরিমাণ আরও বাড়বে। অন্যান্য উপজেলারও প্রায় একই অবস্থা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘২০২২ সালের বন্যাতেও সড়ক বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সড়ক মেরামত করতে না করতে আরও একটি বিপর্যয় এসেছে এবং ধারণার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক। এখন কাজ হচ্ছে এই সড়কগুলো দ্রুত যাতায়াত উপযোগী করা।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যাদুর্গতদের কাছে সরকারি সহায়তা ও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। পানি পুরোপুরি নেমে এলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সিটি করপোরেশন এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বন্যা দেখা দেয়। সুরমা তীরবর্তী বিদ্যুৎ সাব স্টেশনগুলো রক্ষার জন্য বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কিশোরী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাশ্ববর্তী একটি ৫ তলা খালি ভবনে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমতে শুরু করায় তারা বাসাবাড়িতে ফিরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।