৩ মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশ
সুন্দরবনে তিন মাসের জন্য জেলেসহ সব প্রকার পর্যটক প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ নিষেধজ্ঞা কর্যকর হবে। সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানসের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর এ সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ।
পুর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত এই তিন মাস মাছের প্রজনন মৌসুম। তাই এই তিনমাস মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকবে সুন্দরবন প্রবেশের সব পারমিট। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের মতো আবার সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটকদের জন্য পারমিট দেওয়া শুরু হবে।
জেলেরা জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকাসহ ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছর মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। নিষিদ্ধ এসব নদী-খাল ছাড়া সারা বছর প্রতি গোনে (প্রতি মাসের অমবস্যা ও পূর্ণিমার সময়) উপকূলীয় এলাকার হাজার পারমিটধারী জেলে মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বর্তমানে ঘুর্ণিঝড় রিমালের কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তার ওপর মৎস্য আহরণ তিন মাস বন্ধ থাকলে জেলেদের জীবন-জীবিকা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ও জালাল মোল্লা জানান, সুন্দরবনের জেলেদের মাছ ধরা ছাড়া এবার আর কোনো কাজ কারার সুযোগ নেই। এ বছর তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে জেলেরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
উপজেলার বকুলতলা গ্রামের নুর ইসলাম মুন্সি, সোনাতলা গ্রামের আসাদুল মাতুব্বর, খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হাবিব হাওলাদার ও জামাল হাওলাদার জানান, তারা ৩০/৪০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এখন মাছ ধরা বন্ধ করে দিলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে। সরকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে আর সুন্দরবনে যাবেন না বলেও জানান।
এ ব্যাপারে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান জানান, জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে মৎস্য প্রজননের জন্য উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সাধারণত সব মাছে ডিম ছাড়ে। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এ বছর ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত তিন মাস সব প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে। এ জন্য নির্ধারিত ষ্টেশনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানসের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে এ সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ। এর ফলে সুন্দরবনে এ তিন মাস নিরাপদে মৎস্য প্রজনন ঘটে থাকে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?