শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ৩ শতাংশ বাকি আছে: ফারুক খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ মে ২০২৪, ২১:০৪
শেয়ার :
শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ৩ শতাংশ বাকি আছে: ফারুক খান

রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাগের অগ্রগতি নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, ‘৯৭ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। কাজের অগ্রগতিতে আমি সন্তুষ্ট। ৩ শতাংশ কাজের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়ে গেছে, এর মধ্যে কো-অর্ডিনেশন টেস্টিং বাকি রয়ে গেছে। আশা করি যে সময় বাকি আছে তার মদ্যে হয়ে যাবে। চলতি বছরের শেষের দিকে আমরা শুরু করতে পারব। সে হিসেবে আগামী বছর পুরোপুরি এ টার্মিনাল চালু হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থার্ড টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ফারুক খান বলেছেন, ‘পৃথিবীতে কোথাও এরকম কাজের ক্ষেত্রে এভাবে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারে না। কারণ এটা হাইলি টেকনিক্যাল একটা কাজ। দেখা গেল গুছিয়ে এনেছেন, তখন নতুন করে অন্য আরেকটা কাজের জন্য আবার সময় লাগছে। এটা কোনোভাবেই পরিকল্পনা করে একদম টাইম মতো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।’

বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিমানবন্দরের এই টার্মিনালটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর। তবে সুন্দর হলেই হবে না, এটা রেগুলার মেনটেইন করতে হবে। আমি মনে করি, সিভিল অ্যাভিয়েশন এভাবেই তাদের ম্যানপাওয়ারকে তৈরি করবে।’

নতুন টার্মিনালের সুযোগ-সুবিধার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই টার্মিনালের ইমিগ্রেশন কাউন্টারটা অনেক বড় করা হয়েছে। কিছুদিন আগে আমি জার্মানি গিয়েছিলাম। সেখানে মাত্র ছয়টা ইমিগ্রেশন কাউন্টার ছিল। আমি প্রায় ৩ ঘণ্টা সেখানে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। আমাদের এখানে ৫৪টি কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ভিআইপি, প্রবাসী ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা দেখা হবে।’

সরকার দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণের উদ্যোগের কথা বলে আসছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফারুক খান বলেন, ‘যেকোনো বিমানবন্দরে ২ থেকে ৩টা রানওয়ে থাকা স্বাভাবিক। আমাদের বর্তমান রানওয়েতে আইএলএস (ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম) সিস্টেম উন্নত করা হচ্ছে। রাডারগুলো উন্নত করা হচ্ছে। এগুলোর মাধ্যমে সেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। যেহেতু আশপাশে অনেক বিল্ডিং হয়ে গেছে, আমরা দেখছি- কীভাবে দ্বিতীয় রানওয়ে চালু করা যায়।’

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ‘থার্ড টার্মিনালের যে ৩ শতাংশ কাজ বাকি আছে, তা টেস্টিং অ্যান্ড কমিশনিংয়ের। অক্টোবরের মধ্যেই পুরোপুরি প্রস্তুত হবে।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।

প্রসঙ্গত, চেক ইন কাউন্টার বর্তমানে দুই টার্মিনাল মিলে ৬২টি, থার্ড টার্মিনালে রয়েছে ১১৭টি। কার পার্কিং লট বর্তমানে ৮০০টি, থার্ড টার্মিনালে রয়েছে ১২০৩টি। বর্তমানে দুই টার্মিনালে বোর্ডিং ব্রিজ আছে আটটি, থার্ড টার্মিনালে আছে ২৬টি। বর্তমানে দুই টার্মিনালে এয়ারক্রাফট পার্কিং বেতে ২১টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যায়। থার্ড টার্মিনালে আরও ২৩টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। বর্তমানে দুই টার্মিনাল এলাকার আমদানি কার্গো এলাকা আছে ১৩ হাজার ৭০০ বর্গমিটার, যেখানে বছরে ৮৪ হাজার ৩৭৯ মিটার মালামাল আমদানি করা যায়, থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ হলে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৭০ টন মালামাল আমদানি করা যাবে।

অন্যদিকে, দুই টার্মিনালে বর্তমানে রপ্তানি কার্গো এলাকা ১৯ হাজার ৬০০ বর্গমিটার, যেখানে বছরে ২ লাখ ৫৬০ টন মালামাল রপ্তানি করা যায়। থার্ড টার্মিনালে ৩৬ হাজার বর্গমিটারের রপ্তানি কার্গো এলাকায় আরও ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪১ টন মালামাল রপ্তানি করা সম্ভব হবে।