রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
৩০ মে ২০২৪, ১৯:৫৭
শেয়ার :
রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—তা নির্মাণ করে দেবে সরকার। ইতিমধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আগামীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই যেন কাজ করা হয়, তার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে। এই ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই আজকে দুর্যোগ দুর্বিপাকে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। ধারাবাহিকভাবে গনতন্ত্র আছে বলেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।’ 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস কলেজ মাঠে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শেষে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের জলোচ্ছ্বাস ছিল অত্যন্ত ভয়ংকর। আমি মানুষকে ধন্যবাদ জানাই, তারা মুজিব কিল্লাসহ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা চাই দুর্যোগ থেকে যেন এ অঞ্চলের মানুষ মুক্তি পায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তুহারা মানুষের বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগসহনীয় এ সকল ঘর এই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’

আগামীতে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রিমাল যখন আঘাত হানে, তথন মাঠে কোন ধান ছিল না। তারপরও কৃষকরা যাতে আবার ঘুরে দাড়াতে পারে, তার জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ করা হবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এর আগে অনেক সরকার ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন কোনো সরকার কাজ করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই আবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন হয়। দক্ষিণাঞ্চলের জন্য সেনানিবাস, নৌঘাঁটি, রাডার স্টেশন, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নতুন একটি বন্দর নির্মাণ করে করে দেওয়া হয়েছে। নদী ড্রেজিং করে বন্দর চালু রাখা হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনার জন্য যা যা দরকার, তার কিছু সরকার করেছে।’

সরকারের বিভিন্ন নিরাপত্তা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। আগামীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করেছিলাম, আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দেব।’  

এর আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড উপকূলীয় এলাকা হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা সাড়ে ১২টায় কলাপাড়া সরকারি মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস কলেজ মাঠে এলে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাকে স্বাগত জানান। এ সময় হাত নেড়ে জনতাকে অভিভাদন জানান তিনি। ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান পরিণত হয় বিশাল জনসভায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিব্বুর রহমান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল জাহিদ ফারুক, সাবেক চিপ হুইপ আ স ম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাসিম, শাম্মী আকতার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেজবাহুল হাসান বাচ্চু ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সময় প্রায় দুই হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহয়তা দেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের আন্ধার মানিক নদীর ওপর নির্মিত শেখ কামাল সেতু পরিদর্শন শেষে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্রে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে পটুয়াখালী ত্যাগ করেন।