তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ আজ, আরও ৩টি স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ মে ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ আজ, আরও ৩টি স্থগিত

উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বুধবার ১১২ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মামলা জটিলতা ও ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২৫ উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে। সে হিসাবে আজ বুধবার ভোট হবে ৮৭ উপজেলায়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে আগের ধাপগুলোর চেয়ে অধিকসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না।

গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, কেউ যদি শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে যে উপজেলাগুলোয় নির্বাচন বন্ধ আছে, সেগুলোতে ভোট হবে, তা আবহাওয়া কবে ভালো হবে, সামনে ঈদ, স্থানীয় প্রশাসনের মতামত ইত্যাদি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ভোট আছে, সেদিনও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের মতামতের ওপর নির্ভর করবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যদি এখনো বলে যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়, সেখানে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আইনশৃঙ্খলায় কোনো প্রভাব পড়বে না। কেননা প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আরও বেশি নিয়োগ করা হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি কেমন তা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে কিনা সেটি বলা কঠিন। কোন জায়গায় কত ইফেক্ট পড়েছে, সেটি বলা যাচ্ছে না।

অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশা করি না যে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে। আমরা মনে করি না সহিংসতা করে কেউ পার পাবে। কেননা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশি নিয়োগ করা আছে।

দুপুরের পর ভোট বেশি পড়ে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক ওই ইসি সচিব বলেন, এক শতাংশ ভোট পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। ভোটার যা আসবে তাই। আমাদের কঠোর নির্দেশ যে ভোটার যদি একজন আসেন একজনই দেখাতে হবে। ৫০ জন এলে ৫০ জনই দেখাতে হবে। কেউ যদি বেশি দেখায় আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ না থাকায় গত সোমবার ১৯ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ভোটের আগের দিন আরও তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত করেছে ইসি। উপজেলাগুলো হলো- চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও কচুয়া এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরী।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক শরিফুল আলম জানান, সবশেষ খালিয়াজুরী উপজেলায় সড়ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে যে ১৯ উপজেলা ভোট স্থগিত করা হয়, সেগুলো হলো- বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা; খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালী জেলার সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকী; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া; ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন; ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঁঠালিয়া; বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা ও রাঙামাটির বাঘাইছড়ি।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে এর আগে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সব মিলিয়ে ২২ উপজেলায় ভোট স্থগিত করল কমিশন।

প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয়েছে গত ৮ মে। এসব উপজেলায় গড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট পড়ে। প্রথম ধাপে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮ জন নির্বাচিত হন।

দ্বিতীয় ধাপে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পার হন ২২ জন। ২১ মে এ ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৮ শতাংশ। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট রয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। অন্যদিকে বিএনপির অল্প কিছু নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়লেও দলটি উপজেলা পরিষদের ভোট বর্জন করেছে।