এমপি আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধার, দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ ভারতীয় পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় একটি গণমাধ্যম। আজ বুধবার সকালে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে খবর প্রকাশ করে তারা। এ সময় ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় ওই গণমাধ্যম।
এছাড়া কলকাতা২৪ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সাইটে এমপির মরদেহ পাওয়া গেছে বলে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
তারা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে-
ভোটের মুখে খাস কলকাতায় বড় ঘটনা ঘটে গেল। খুন হয়ে গেলেন বিদেশী সাংসদ। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল কলকাতার নিউটাউন এলাকায়। মৃতের নাম আনোয়ার উল আজিম। তিনি বাংলাদেশের সাংসদ বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
জানা যায়, বাংলাদেশের এই সংসদ সদস্য ১৩ মে নিউটাউনের একটি বাড়িতে যান, সেই বাড়িতেই খুন করা হয় খুলনার ঝিনাইদহ- ৪ আসনের এমপি আনোয়ার উল আজিমকে।
পুলিশের দাবি, নিউটাউনে যে বাড়িতে তিনি গিয়েছিলেন সেটা নাকি একজন এক্সাইজ অফিসারের। তাদের অনুমান, ভাড়া নেওয়া বাড়িতে ডেকে এনে খুন করা হয়েছে সাংসদকে। খুনের দিন এই বাড়িতে নাকি মহিলা সহ একাধিক লোকজন ছিলেন। কিন্তু সাংসদের রহস্যজনক মৃত্যুর পর সবাই নাকি ভারত থেকে পালিয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এমপি আজীম একা ভারতে গেছেন বলে শুরু থেকে প্রচার করা হলেও আসলে তার সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। তারাও বাংলাদেশি বলে এখন পর্যন্ত তথ্য মিলেছে। সিসিটিভি ক্যামেরার কিছু ফুটেজে ভারতীয় গোয়েন্দারা এমন তথ্য পেয়েছেন। ওই দুই ব্যক্তি এমপি আজীমের দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাদের বাড়ি এমপির এলাকায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত চার-পাঁচ দিনে এমপি আজীমের মোবাইল ফোন দু’বার সচল হয়। আসাম ও উত্তরপ্রদেশে এগুলোর অবস্থান দেখা গেছে। এর আগে বেনাপোল সীমান্তের কাছাকাছি ও মোজাফফরাবাদে তাঁর ফোনের অবস্থান দেখায়।
গত ১২ মে এমপি আজীম চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। ওই দিন সকালে নিজের গাড়িতে তিনি একাই দর্শনার উদ্দেশে রওনা হন। বেলা ১১টার দিকে তিনি দর্শনা চেকপোস্ট পার হয়ে ভারতের গেদে স্টেশনে প্রবেশ করেন। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে অল্প সময়ের মধ্যে ওপারের একটি ইঞ্জিনচালিত রিকশায় রওনা হন। এ সময় তার সঙ্গে একটি লাগেজ ছিল। তিনি চলে যাওয়ার পর চালক তরিকুল ইসলাম গাড়ি নিয়ে কালীগঞ্জে ফেরেন।
এরপর ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন গোপাল বিশ্বাস নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি মূলত স্বর্ণ কারবারি। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, আজীমের সঙ্গে তার ২৫ বছরের পারিবারিক সম্পর্ক। ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আজীম তার কলকাতার মণ্ডলপাড়া লেনের বাড়িতে আসেন। তিনি কলকাতায় এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। পরদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সেখান থেকে বের হন আজীম। যাওয়ার সময় তিনি (আজীম) বলে যান, দুপুরে খাবেন না। সন্ধ্যায় ফিরবেন। পরে তিনি কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে এসে গাড়ি ডেকে দিয়ে চলে যান। জিডির তথ্য অনুযায়ী, সন্ধ্যায় গোপালের বাসায় ফেরেননি আজীম। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে গোপালকে একটি বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, বিশেষ কাজে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। ১৫ মে আজীমের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আরেকটি বার্তা আসে। তাতে তিনি দিল্লি পৌঁছার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।’