অর্থপাচারকারী ও ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের আল্টিমেটাম: সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ মে ২০২৪, ২০:৪৮
শেয়ার :
অর্থপাচারকারী ও ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের আল্টিমেটাম: সাকি

ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের নামের তালিকা প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। এর মধ্যে তালিকা প্রকাশ না করলে গণতান্ত্রিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি থেকে তিনি এমন আল্টিমেটাম দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই অর্থবছরেই আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সমস্ত অর্থপাচারকারী ও ঋণখেলাপিদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর তা না করলে আমরা আবার আসব। আজকে আমরা যতজন আরও বেশি সংখ্যায় আসব। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আসবে। শুধু আমরা আসব না, আমাদের আরও গণতান্ত্রিক বন্ধুরা আসবে। এই অফিসে (বাংলাদেশ ব্যাংক) থাকতে হলে আপনাদের এই ব্যবস্থা নিতে হবে। হয় আপনারা এই অফিসে থাকবেন, ব্যাংকের কর্মকর্তা থাকবেন আর না হয় ছেড়ে চলে যেতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ চায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকের সম্পদ সুরক্ষিত থাকুক। কিন্তু যারা ব্যাংকগুলোকে ভেতর থেকে ফোকলা বানিয়ে ফেলছে। আমরা এসেছি সেগুলোর প্রতিবাদ করতে। আমরা পুলিশ বা সরকারের বাধাকে মানি না। আর যখন একটা দেশে ‘সরকার বৈধ’ হয় তখন ‘আইন’ মানার প্রশ্ন আসে কিন্তু এই ‘সরকার অবৈধ’, এই সরকারের সমস্ত নির্দেশ অবৈধ, এই সরকারের কোনো নির্দেশ মানতে জনগণ বাধ্য নয়। এই সরকার যত আইনই দেখাক, মানুষের ভোটে তো এরা নির্বাচিত নয়।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘গত পনের বছরে ঋণখেলাপি কত বেড়েছে? আপনারা বলেন ঋণখেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেটা আসলে চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংকের পরিচালকরা পরস্পর পরস্পরের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু ঋণখেলাপিদেরকে পুনঃতফসিলের মধ্য দিয়ে আবারও ঋণ দিয়ে দেয়। ঋণ ফেরত দেওয়ার চাপ না দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের নির্দেশে নাকি ঋণ মাফ করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে এরা নানারকম ফন্দিফিকির করে ঋণ মওকুফ করে দেয়। জনগণের কাছে এগুলোর কোনো পরিসংখ্যান নেই। জনগণের সঞ্চিত টাকাকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে কতিপয় ‘চিহ্নিত’ লুটেরা। অন্যদিকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে সরকার মিলিয়ে দিয়ে নতুন ব্যাংক লোপাটের পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দুর্বল ব্যাংকের লোপাটকারী পরিচালকদের শাস্তিতো হয়নি বরং নতুন প্রমোশন পেয়ে তারা সবল ব্যাংকের পরিচালক হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সমস্ত কিছুর হিসেব আছে, লুটপাটের পরিমাণেরও হিসাব আছে আমরা সকল ঋণখেলাপির হিসাব চাই।’

এ সময়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য হাসান মারুফ রুমী, তাসলিমা আখ্তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, তরিকুল সুজন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলিফ দেওয়ান, অঞ্জন দাস, মিজানুর রহমান মোল্লা, ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ আরও অনেকে।